অপরিণামদর্শী চিন্তা: আর্লি ম্যারিজ টু আর্লি ডিভোর্স

2

বাংলাদেশে ধর্মীয় অঙ্গনে চিন্তার ক্ষেত্রে প্রচণ্ড কপি পেস্ট প্রবণতা রয়েছে, যার কিছু কিছু বহু মুসলমানের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে।

আপনারা জানেন, ইউটিউব ফেসবুকে বিদেশী মৌলভীদের বক্তব্য দেখে বাংলাদেশে আর্লি ম্যারিজ তথা অল্প বয়সে বিয়ের একটা জোর প্রচারণা শুরু হয়েছিল।

এ প্রচারণার বিরুদ্ধে এক সময় আমি অনেক লিখেছিলাম। আমি বলেছিলাম বিয়ে করার ক্ষেত্রে ভরনপোষণ শর্ত। বউকে না খাওয়াতে পারলে বউ তালাক গ্রহণ করতে পারে। তাই বিয়ের আগে কামাই থাকতে হবে। এক্ষেত্রে অভাবী লোকের জন্য সু্ন্নত হলো বিয়ে করতে অপারগ হওয়ার দরুণ রোজা রাখা।

কিন্তু কিছু লোক আছে যারা বাস্তবতাকে আমলে না নিয়ে, ইসলামের বিধান না মেনে ট্রেন্ডি প্রচারণাকেই ইসলাম বলে প্রচার করতে থাকে। এরা আর্লি ম্যারিজ নিয়েও একই কাজ করেছিল।
সম্প্রতি খবর পেয়েছি, আর্লি ম্যারিজ আয়োজনে জড়িত কেউ কেউ বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে এর থেকে মুখ ফিরিয়েছে।

ঘটনা হলো আয় রুজিহীন তরুণ ছেলেমেয়েরা বিয়ে করার পর দ্রুত ডিভোর্স করে ফেলছে। আর এটি এমন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে হয় যে ছেলেমেয়ের মধ্যে তাকওয়ার ঘাটতি হয়ে যাচ্ছে। অনেক পর্দানশীন মেয়ে আর্লি ডিভোর্সের পর হিজাব পর্যন্ত ছেড়ে দিচ্ছে।

সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, প্রাক্টিসিং ধর্মীয় পরিবারগুলোতে বাবা-মা ও সন্তান এক গভীর হতাশা ও বিষণ্নতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যা মূলতঃ স্বেচ্ছায় মুসিবত ডেকে আনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে মেয়েদের জীবনে কত সুন্দর স্বপ্ন থাকে। অথচ অল্প বয়সেই ডিভোর্সের ধাক্কা নিতে হচ্ছে তাদের। চিন্তা করুণ যে একটা নতুন মেয়ের ডিভোর্স হয়ে গেলে তার জীবনটা কত এলোমেলো হয়ে যায়।

আমি জেনেছি, যারা আর্লি ম্যারিজের ক্যাম্পেইন করতো তাদের কাছেই ইয়ং কাপলদের ঝগড়া বিবাদের সালিশ যায়, কিন্তু সমাধান কিছুই হয় না, তারা দায় নেয় না, বরং ছেলেমেয়ে দুজনেই ভিক্টিম।

আফসোসের ব্যাপার হলো, যারা এ পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছেন তারা মূলতঃ সৎ নিয়তে লোকজনের গলায় ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন।