ছোটদের সফল বানাতে ৫টি বিষয়কে গুরুত্ব দিন

2
ছোটদের সফল বানাতে ৫টি বিষয়কে গুরুত্ব দিন

প্রতিটি পরিবারেই শিশুকিশোর আছে। সব মা-বাবাই চান তাদের সন্তানেরা জীবনে সাফল্য অর্জন করুক। কিন্তু এটা এত সহজ নয়। সাধারনত বাচ্চাদের সাফল্য অর্জনে সাহায্য বলতে মা-বাবারা তাদের পরীক্ষা কিংবা খেলাধুলায় ভাল হবার উৎসাহ দেয়াকেই বুঝে থাকেন। এই বিষয়গুলো তো আছে, কিন্তু এছাড়া আরো অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানকে সফলরূপে বেড়ে উঠতে সহায়তা করতে পারেন।

কাজেই, আপনি যদি জানতে চান যে, কীভাবে আপনার বাচ্চাকে জীবনে সফল বানাতে পারেন তবে আমাদের এই লেখাটি পড়ুন, যেখানে আমরা জানাচ্ছি সবচেয়ে কার্যকরী কৌশলগুলো।

কীভাবে আপনার সন্তানকে জীবনে সফ হতে সাহায্য করবেন:মনোবিজ্ঞানীদের কাছ থেকে জেনে নিন ৫টি উপায়

১. সন্তানের সাথে ঘনিষ্ সম্পর্ক বজায় রাখু
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক স্টাডি রিসার্চ অনুযায়ী, একটি সুসম্পর্কপূর্ণ পারিবারিক বন্ধন একজন শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনে সফলতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। উষ্ণ যত্নআত্তি শিশুর নিরাপদ বন্ধনকে অসাধারণরূপে বিকশিত করে, যা খুবই আশাব্যঞ্জক ফলাফল নিয়ে আসে। অন্য কথায়, শিশুর জন্মের দিন থেকে মা-বাবাই তাঁর সাফল্যের শুরুটা নির্ধারন করেন। তাই আপনার সন্তান যত ক্লাসই করুক, এটি ততক্ষন পর্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল আনবে না যতক্ষন পর্যন্ত না আপনার সাথে তার বন্ধন সুদৃঢ় থাকে।

২. সন্তানকে গৃহস্থালি কাজে উৎসা দিন
যদিও বেশিরভাগ শিশু ঘরের কাজ-কর্ম করতে অপছন্দ করে কিন্তু রোজকার কাজের এই রুটিনটি বাচ্চাদের ভবিষ্যতে সফল হতে সাহায্য করে। গৃহস্থালি কাজ করতে করতে শিশুর ভেতর উচ্চমানের শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধের বিকাশ ঘটে।

ময়লার ঝুড়ি বাইরে নেয়াই হোক কিংবা থালাবাসন পরিষ্কার করা- এ সবই শিশুর জন্য উপকারী। মনোবিজ্ঞানীদের প্রফেশনাল অভিজ্ঞতা থেকে বের করেছেন যে, শিশুদের কঠোর পরিশ্রমের মূল্য বোঝানোর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত উপায় হচ্ছে তাদের গৃহস্থালি কাজে নিযুক্ত করা। এর মাধ্যমেই শিশু বোঝে, একটি কাজ পূর্ণরূপে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রত্যেকের অবদান থাকতে হবে।

৩. প্রিস্কুলার শিশুকে মৌলিক পাঠ শেখান
যে সকল শিশু গণিত এবং সাহিত্যের মৌলিক ধারণাগুলো জেনেই বিদ্যালয়ের পাঠ শুরু করে, তারা ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবনে তুলনামূলক বেশি কৃতিত্ব অর্জন করে। তাই, আপনি যদি আপনার সন্তানকে ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবনে সফল হতে সহায়তা করতে চান তবে তাকে মাসে অন্তত দুটি বই পড়তে উৎসাহ দিন এবং মৌলিক গণিতের ধারণাগুলো শেখান।

৪. সহজে হাল ছাড়তে দেবেন না
আমাদের জীবনটা কানায় কানায় প্রতিকূলতায় পূর্ণ এবং এটা মেনে নিয়েই এগুলোকে সম্মান ও মর্যাদার সাথে মোকাবেলা করা উচিত। আপনার সন্তানকে সেইসব কঠিন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করতে সহজে হাল না ছেড়ে দেবার শিক্ষা দিন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনার সন্তান কোন খেলা কিংবা নাচের ক্লাসে অংশ নিয়েছে। একটা মুহূর্তে বাচ্চারা হয়তো কঠিন পরিশ্রম ও অনুশীলনী নিয়ে আপনার কাছে অভিযোগ জানাবে। যদি এ কর্মসূচীগুলো ছাড়ার কোন বৈধ কারণ না থাকে তবে খেলাধুলা/ক্লাসের উপকারিতাগুলো চিহ্নিত করে তাকে উদ্বুদ্ধ করুন।

৫. সন্তানকে ভুল করতে দিন
সন্তানকে সুশিক্ষিত এবং সফলরূপে গড়ে তোলার শেষ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কৌশলটি
হল বাচ্চাদের ভুল করলে শাস্তি না দেয়া। মনে রাখবেন, ভুল এবং অন্যায় এক না। পরীক্ষায় ফেইল করা কিংবা খেলায় হেরে যাওয়া এগুলো খুব স্বাভাবিক। এবং যেকোন ক্ষতি কিংবা ব্যর্থতা ভবিষ্যৎ জীবনে অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়।

উপরে বর্ণিত কৌশলগুলো আপনার লক্ষ্য অর্জনে তখনই সাহায্য করবে যখন আপনি এগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করবেন। যার ফলস্বরূপ, আপনার সন্তানের জীবনকে আরো আশাবাদী এবং অর্থবহ করে তুলতে পারেন।

ব্লগ সূত্র: অ্যাডিকটেড টু সাকসেস