ব্রুনাইয়ের জঙ্গলে বন্দি ৪ বাংলাদেশী

15

এবার ব্রুনাইয়ের জঙ্গলে চার বাংলাদেশীকে বন্দি করে রাখার খবর পাওয়া গেছে। বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরে এ খবর জানিয়েছেন কালিয়াকৈর উপজেলার নাবিরবহর গ্রামের হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব।

একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, ব্রুনাইয়ের জঙ্গলে মানবপাচারকারীদের হাতে বন্দি আছেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার জয়নাল আবেদীন, আক্কেল আলী, ফারুক হোসেন ও রুবেল মিয়া।
কয়েক মাস অনাহার, অর্ধাহার ও নির্মম নির্যাতনে শুকিয়ে গেছে হাবিবুর রহমানের শরীর।

তিনি জানান, দালাল চক্র ব্রুনাইয়ের একটি জঙ্গলে নিয়ে তাদের আটকে রাখে। কোনো কাজ না দিয়ে তাদেরকে অন্য দালালের কাছে বিক্রির চেষ্টা করে তারা।

কালিয়াকৈর উপজেলার নাবিরবহর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হতভাগ্য ৫ যুবককে মোটা বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ব্রুনাই নিয়ে যায় স্থানীয় আদম বেপারী কামরুল ইসলাম, সেলিম মিয়া ও মোক্তার আলী নামে তিন জন। রফিকুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন এ চক্রের নেপথ্যে। পাঁচ যুবকের মধ্যে কৌশলে পুলিশী সহায়তায় তিনি দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও বন্দি আছেন বাকি চারজন।

স্বজনরা জানান, জমি-জিরাত, গরু, গয়না বিক্রি করে পাঁচ যুবককে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন তারা। এজন্য জনপ্রতি চার লাখ টাকা নিয়েছে দালালরা।

ব্রুনাইয়ের জঙ্গলের বন্দিদশার খবর জানার পর হতভাগ্য চার যুবকের স্বজনরা দালালদের চাপ দেয়। দালালরা যুবকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে জনপ্রতি আরও দেড় লাখ টাকা দাবি করে।
পাচার হওয়া যুবক ফারুকের স্ত্রী সুমি বেগম জানান, তারা ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন।

ফুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এরকম ছয়জনের অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টা তদন্ত করে দেখছি। এখন পর্যন্ত আমি যা শুনেছি তা হৃদয়বিদারক। পাচার হওয়া মানুষগুলোকে খাবারও দেওয়া হচ্ছে না। তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা না হলে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ প্রয়োজন।’

এদিকে, দালাল চক্রের হোতা সেলিম বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাচার হওয়া যুবকদের স্বজনরা।
অভিযোগের ব্যাপারে সেলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার আরেক সহযোগী ব্রুনাইপ্রবাসী কামরুল ইসলামের ওপর দোষ চাপান। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার করার কিছু নাই। যা করেছে কামরুলই করেছে।’সূত্র: দ্য রিপোর্ট