মালদ্বীপের নির্বাচনে ভারতপন্থী প্রেসিডেন্টের হার

42
মালদ্বীপের পতাকা

মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের (পিএনএস) মোহামেদ মুইজ্জু দ্বিতীয় দফার ভোটে জয়ী হয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্সের।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে ভোটের ফলাফল গণনা শেষে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এক্সের (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় মুইজ্জুকে অভিবাদন জানিয়ে নিজের পরাজয় স্বীকার করেছেন।
প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ ও মোহামেদ মুইজ্জুর মধ্যে শনিবার দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়। এ ভোটে ৫৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন মুইজ্জু।

আগামী ১৭ নভেম্বর মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুইজ্জুদায়িত্ব বুঝে নিবেন। তার আগ পর্যন্ত মোহাম্মদ সলিহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন।

জানা গেছে, দেশটির নিয়ম অনুযায়ী ভোটে কোনো প্রার্থী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয়বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। প্রথম দফার নির্বাচনে মুইজ্জুপেয়েছিলেন ৪৬ শতাংশ আর সলিহ ৩৯ শতাংশ ভোট পেলেও দ্বিতীয় দফায় মুইজ্জুপান ৫৪ শতাংশেরও বেশি ভোট।

মালদ্বীপ ভারত মহাসাগরের মাঝখানে একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে।  প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্য দিয়ে যে জাহাজ চলাচলের রুট বা শিপিং লাইনগুলো আছে, তার মাঝামাঝি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। তাই দেশটিতে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে ভারত ও চীন প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে। মুইজ্জুর দল চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো কর্মসূচি থেকে বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা নিতে আগ্রহী। সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনও ছিলেন চীনঘেঁষা। তিনি মালদ্বীপে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ভারতকে প্রত্যাখ্যান করে চীনের কাছ থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছিলেন।

২০১৮ সালে ইয়ামিনের কর্তৃত্ববাদী শাসনকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসেন ৬১ বছর বয়সী সলিহ। অভিযোগ রয়েছে, ইয়ামিন দেশটিকে চীনা ঋণের ফাঁদে ঠেলে দিয়েছে। ইয়ামিনের চীনঘেঁষা নীতির নয়াদিল্লিকে শঙ্কিত করে তুলেছিল। ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

এদিকে ভারত কৌশলগত জোট কোয়াডের সদস্য। চার সদস্যের এই জোটের অন্য তিন সদস্যদেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। ভারতের অতিমাত্রায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব দ্বীপরাষ্ট্রটির বেশির ভাগ মানুষ পছন্দ করেন না। অথচ সলিহর আমলে সেই প্রভাব অনেকটা বেড়ে যায়।