চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক

16

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় চলমান আফ্রো-এশীয় শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর সম্মেলনস্থল বালাই সিদাং জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে (জেসিসি) এ দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি।

বৈঠকে দুই নেতা দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।

শি জিনপিংয়ের পর শেখ হাসিনা বৈঠক করেন ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মেঘবতী সুকর্নপুত্রীর সঙ্গেও।

সেখানেও শেখ হাসিনা ও সুকর্নপুত্রী দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।

এ দুই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব একেএম শামীম চৌধুরী ও জাকার্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাওনাইন।

এর আগে, বুধবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ৯টায় জেসিসিতে আফ্রো-এশীয় শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। উদ্বোধনের আগেই শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী ও তার সঙ্গীরা।

সকাল সোয়া ৯টায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‍আয়োজক দেশের প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী শীর্ষ নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার দেওয়া স্বাগত ভাষণের পর ঘণ্টা বাজিয়ে তিন দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক ও জাকার্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাওনাইন।

সম্মেলন উপলক্ষে ভেন্যু ও আশেপাশের এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এশিয়া ও আফ্রিকার ৩৪টি দেশের পতাকা সম্মেলনে স্থান পেয়েছে। সড়কের দুই ধারও করা হয়েছে পতাকা সজ্জিত।

শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনস্থলে পৌঁছার পথে ইন্দোনেশিয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীদের পতাকা নেড়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। সম্মেলনস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যস্ত এবং আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভীষণ ব্যস্ততায় কাটবে বুধবার। সম্মেলন চলাকালে বেশ ক’টি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মেঘবতী সুকর্নপুত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সম্মেলনের মূল অধিবেশনে যোগ দেবেন। এটি হবে সম্মেলনের প্রথম প্লেনারি সেশন। এখানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।

এরপর দুপুরের খাবার গ্রহণ শেষে বেলা দেড়টায় দ্বিতীয় প্লেনারি সেশনে অংশ নেবেন এবং আড়াইটার পর শেখ হাসিনা সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লুংয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন।

বিকেল ৩টার পর তিনি বৈঠক করবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবের সঙ্গে। এর পরপরই ৩টা ৩৫ মিনিটে তার বৈঠক রয়েছে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন সেইনের সঙ্গে।

বেলা ৪টায় ফের মূল সম্মেলনে যোগ দিতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এটি তৃতীয় প্লেনারি সেশন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দুই মহাদেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে) প্রধানমন্ত্রী ও সফরসঙ্গীরা বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে জাকার্তার সুকর্নো-হাত্তা বিমানবন্দরে পৌঁছান।

এসময় প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয় স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার। এছাড়া, ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে মেয়েরা পতাকা ও ফুল নেড়ে তাকে শুভেচ্ছা জানায়। একটি মেয়ে তার গলায় ফুলের মালা দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়।

বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ইন্দোনেশিয়ার বন ও পরিবেশমন্ত্রী নুরবায়া বাকের। এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক, ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাওনাইন, ঢাকায় নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিরান্তা আতমাদজা উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির বহর যায় জাকার্তার হোটেল বরোবুদুরে। সফরকালে এখানেই অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।