যৌন হয়রানিতে অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা

35

বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় যৌন হয়রানির ঘটনায় আটজনকে সনাক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদের ধরিয়ে দিতে প্রতিজনের জন্য এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।

রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

তিনি বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের সনাক্ত করা হয়েছে, তবে তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদের গ্রেপ্তারে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করলে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়া হবে।’

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিতে ছাত্র ইউনিয়ন ও পুলিশের মধ্যকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘ওই ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধী হলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

চিহ্নিত ৮ নারী লাঞ্ছনাকারী
প্রসঙ্গত, বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় মিলনমেলা এবং অসাম্প্রদায়িক উৎসব উদযাপনের অন্যতম একটি উদাহরণ পহেলা বৈশাখ। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সবার থাকে তাদের নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি। আর ঢাকার মূল অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু মূলত রমনা বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদসহ সমগ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বলতে গেলে বাংলাদেশের যেকোনো জাতীয় উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ পহেলা বৈশাখে ঘটে গেলো সবচেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রীতিকর ঘটনা। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পাশবিকতার শিকার হয়েছেন বেশকিছু নারী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বখাটের দল নারীদের উত্যক্ত করে, হয়রানি করে, তাদের জামাকাপড় ধরে টানাটানি করে, গায়ের ওপর হামলে পড়ে। টানা হ্যাচড়া করে কয়েকজন নারীকে বিবস্ত্র করার ঘটনাও ঘটে ওইদিন। তাতে বাধা দিতে গিয়ে আহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকজন।

চার নিপীড়ককে ধরে এসআই আশরাফসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে দেয়া হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন। ওই ঘটনায় পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও গত এক মাসে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

তবে এর কয়েকদিন পর ডিএমপির যুগ্ম কমিনশার মনিরুল ইসলাম বললেন উল্টো কথা। ডিবির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে বিবস্ত্রের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোনো নারীকে বিবস্ত্র করার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তা কোনো প্রত্যক্ষদর্শী এখনো নিশ্চিত করেনি। থানা বা পুলিশের কাছে কেউ এখনো অভিযোগও দায়ের করেনি। এতে ঘটনাটিতে যথেষ্ট কনফিউশন রয়েছে।’