কারারুদ্ধ নেতাদের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি

25

কারারুদ্ধ দলের নেতাদের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কারারুদ্ধ বিএনপি নেতৃবৃন্দের অনেককেই বার বার রিমান্ডে নেয়ার ফলে ও সু-চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কারাগারে। অনতিবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সব নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, গ্রেফতারকালীন সকল নেতৃবৃন্দকে সুস্থ অবস্থায়ই গ্রেফতার করা হয়েছিল। অথচ এদের মধ্যে কেউ কারাগার থেকে লাশ হয়ে ফিরছেন, কেউ হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন, অন্যরা রোগ যন্ত্রণায় কারাভ্যন্তরে কাতর হয়ে পড়ছেন প্রতিদিন।”

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি আজ দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হুইল চেয়ারে বসে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করে পুনরায় কারাগারে পাঠানো ঘটনায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। কেননা মির্জা আলমগীর হৃদরোগ, ডায়াবেটিকস্ ক্যারোটিড আর্টারিতে ব-কসহ নানা জটিল রোগে অনেক দিন ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাঁচ মাসাধিক সময় কারাগারে আটক রয়েছেন”

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “তিনি ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। মির্জা আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, শমশের মবিন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গাজীপুর সিটি মেয়র প্রফেসর এম এ মান্নান, উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ও যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসত অনেক নেতা-কর্মী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে শংকটাপন্ন হয়ে উঠছেন ক্রমাগত। এ পরিস্থিতি তাদের পরিবারের যেমন উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে, একই ভাবে দলও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা অনতিবিলম্বে দলের অসুস্থ নেতৃবৃন্দের সুচিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তরসহ আটক সকল নেতৃবৃন্দ-কর্মীদের মুক্তিদানের মাধ্যমে সরকারের মানবিক আচরণের প্রত্যাশা করছি।”

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শক্তিশালী ও কার্যকর বিরোধী দল থাকা অত্যাবশ্যক শর্ত। রাজনীতিতে ভিন্ন মত ও পথ থাকবে এবং তা পরিচালিত হবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী।”

তিনি বলেন, “বিরোধী নেতারা বেঁচে থাকলেই শুধু সরকার তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধিতায় অবতীর্ণ হতে পারবেন। কিন্তু বিরোধী নেতৃবর্গকে সুচিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে রেখে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া চরম অমানবিকতার চিত্র ফুটে উঠছে।”

দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতির চির অবসান হোক, এটাই দেশের সকল মানুষের প্রত্যাশা বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।