সালাহউদ্দিনের ‘সন্ধানদানকারী’ দু’জন আটক

17

Ctg-111‘নিখোঁজ’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধান প্রাপ্তির গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দু’জনকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সালাহউদ্দিনের পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেই প্রতারণার মাধ্যমে তারা মূলত এই গুজব ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবির কারে স্বীকার করেছে।

শনিবার গভীর রাতে নগরীর আগ্রাবাদ ও সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকা থেকে মোখলেসুর রহমান প্রকাশ উজ্জ্বল (২৮) ও আলীম শিকদার প্রকাশ মনিরকে (৩০) আটক করা হয়।

জামালপুর জেলার দেওয়ানবাজ উপজেলার বাসিন্দা উজ্জ্বল নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় একটি ওষুধের দোকানের মালিক। আর ঝালকাটি জেলার কাটালিয়া উপজেলার পাইলপুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মনির ভাটিয়ারি এলাকায় কাপড়ের ব্যবসা করেন। তারা দু’জনেই বতর্মানে থাকেন সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এস আই) সন্তোষ চাকমা বাংলামেইলকে বলেন, ‘পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করার মাধ্যমে শনিবার গভীর রাতে সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধানদাতা মোবাইল ফোনকারী উজ্জ্বল ও পরিকল্পনাকারী মনিরকে আটক করা হয়। উজ্জ্বলকে নগরীর মিস্ত্রী পাড়া থেকে আর মনিরকে ভাটিয়ারি থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দু’জনই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।’

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার তানভীর আরাফাত বাংলামেইলকে জানান, মনির ও উজ্জ্বল দু’জনেই পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের ঘটনাকে পুঁজি করে তারা প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতে পরিকল্পনা করেন। তদের পরিকল্পনা ছিল, সালাহউদ্দিনের সন্ধান পেয়েছে এমন খবর পুলিশকে দিলে তা দ্রত মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়বে। তবে তার সন্ধানের স্থানটি নির্ধারণের কথা ছিল দুর্ঘম কোন এলাকায়। যেখানে পুলিশ যেতে কমপক্ষে তিন-চার ঘন্টা সময় লাগবে।

আর এই ফাঁকে সালাহউদ্দিনের পরিবারের কাছে ফোন করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া যাবে। এমন ভেবে কাপড় ব্যবসায়ী মনির একটি নতুন সিম কিনে ওষুধের দোকাদার উজ্জ্বলকে দিয়ে যে কোন একটি থানার ওসিকে ফোন করার কথা বলেন।

উজ্জ্বলও মনিরের কথা অনুযায়ী ঢাকার উত্তরা থানার ওসিকে ফোনে জানান, বিএনপির নিখোঁজ নেতা সালাহউদ্দিন গাইবান্দা জেলার ফুলছড়ি থানার ফজলুপুর ইউনিয়নের পারুল গ্রামে জনৈক সিরাজুল ইসলাম মাস্টারের বাড়িতে আত্মগোপনে আছে। তিনি খুবই অসুস্থ। তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। এজন্য বিকাশে কিছু টাকা পাঠানো অনুরোধ করেন তারা।

এখবরটি উত্তরা থানার ওসি পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দেয়। এরপর একঘন্টার মধ্যেই পুলিশ এই চর এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেন। এমনকি জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে একটি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয় ঘাটে। তবে ঘন্টাখানেক তল্লাশি চালিয়ে সন্ধানের খবরটি শুধুমাত্র গুজব বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়। এরপর ফোনে এখবর দাতার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পুলিশ।

চট্টগ্রামে ওই ফোনদানাকারীর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের এস আই সন্তোষ চাকমার নেতৃত্বে প্রতারক দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

এডিসি তানভীর আরাফাত বলেন, ‘মূলত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তারা এই গুজব ছড়িয়ে ছিল। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হবে। আদালত থেকে রিমান্ডে এনে তাদের অন্য কোন পরিকল্পনা ছিল কিনা তা বিস্তারিত জানা হবে।’