‘বাজেট বাস্তবধর্মী, মোটেই উচ্চাভিলাসী নয়’

23

‘জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবধর্মী ও সময়ের সাহসী বাজেট’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তিনি বলেন, ‘বাজেট নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। কেউ বলছেন, এই বাজেট বাস্তবায়ন যোগ্য নয়। আবার কেউ বলছেন, অতি উচ্চাভিলাসী বাজেট এটি। আমি মনে করি, এই বাজেট বাস্তবধর্মী, মোটেই উচ্চাভিলাসী নয়।’

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে নৌকার সমর্থন গোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। ‘চলমান রাজনীতি’ নিয়ে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাজেট প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষের চাহিদা বাড়ছে। সরকার সেই দিক বিবেচনা করেই বাজেটের আকার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে বাজেটের আকার বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারকে অতিসত্বর ব্যাংক খাতের দিকে নজর দিতে হবে। ব্যাংক খাত থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় যদি হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ সরকারের অর্থ ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে পারবে না। বাজেটে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিষয়টিও অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আরও বলেন, রাজনৈতিক পরিবেশ যদি স্থিতিশীল থাকে এবং বিরোধীজোট যদি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড না চালায়, তাহলে এবারে প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জিত হবেই। অর্থের বিনিময় হার, রেমিটেন্স, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে। এগুলো একটি টেকসই অর্থনীতির ইতিবাচক সূচক। এ সূচকগুলো অব্যাহত থাকলে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জিত হবেই।

তিনি বলেন, সরকার এ বছর পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেই এ বাজেট অতিগুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ১৯৭১ সালের সম্পর্কে যেতে চাইছে। এ সম্পর্ক উভয় দেশের স্বার্থের ও সম্মানের। নরেন্দ্র মোদির সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।

তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির সরকার বাংলাদেশের প্রতি উদারনীতি প্রকাশ করেছে সীমান্ত বিল পাস করার মধ্য দিয়ে। তার এ সফরে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে বলেও আশা করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।

‘বাংলার মাটিতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঠাঁই হবে না’ উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর বিছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশ থেকে উস্কানি দেওয়া হয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে উলফার কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন খালেদা জিয়ার সরকার।

তিনি বলেন, বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে বন্ধুত্ব দিয়েই কিছু আদায় করতে হয়, শত্রুতা দিয়ে নয়। শেখ হাসিানর সরকার এক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর, যেন বাংলাদেশের মাটি কোনোভাবেই ভারতের বিছিন্নতাবাদীরা ব্যবহার করতে না পারে।

নৌকার সমর্থক গোষ্ঠীর সভাপতি ড. এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা, কৃষক লীগের অর্থ সম্পাদক নাজিম মিয়া, বঙ্গবন্ধু একাডেমির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।