আফগানিস্তানের মসনদে ফের তালেবান, শুধুই সময়ের অপেক্ষা?

106
আফগানিস্তানের মসনদে ফের তালেবান, শুধুই সময়ের অপেক্ষা?
আফগানিস্তানের মসনদে ফের তালেবান, শুধুই সময়ের অপেক্ষা?

আফগানিস্তানের মসনদে ফের তালেবান। এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। দেশটির সরকার তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে লড়াই করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই তারা ক্ষমতা হারাচ্ছে।

আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত সরকারি বাহিনী তালেবানদের সামনে দাড়াতেই পারছে না তালেবানদের সামনে।
প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকা তালেবানদের দখলে চলে যাচ্ছে। তালেবানদের কাছে দিনে দিনে সরকার অসহায় হয়ে পড়ছে।

সরকার উত্তর আফগানিস্তানের প্রায় সব জেলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বর্তমানে তালেবানদের সাথে মাজারে শরিফের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুদ্ধ চলছে।

এটিও দখলের পথে তালেবান। মাজার শরিফ উত্তর আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর। এটি ছিল আফগান কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করার কেন্দ্র।
যদি মাজার শরীফে আফগান সরকার হেরে যায় তাহলে উত্তর আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারাবে তারা।
তাহলে মাজার শরিফ রক্ষায় সরকার কী প্রস্তুতি নিচ্ছে?

এখন পর্যন্ত আফগান সেনাবাহিনীকে ব্যর্থই বলা যায়। তারা তালেবানদের উপরে কিছু বিমান হামলা চালাচ্ছে, কিন্তু সেখানেও তালেবান যোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। তারা আফগানিস্তানকে ভারত সরকারের উপহার দেয়া Mi35 নামে একটি বিমানও দখলে নিয়েছে। গত ১০ আগস্ট একটি ভিডিওতে তালেবান সদস্যদের মোটরসাইকেল নিয়ে Mi35 পাহারা দিতে দেখা যায়।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি মাজার শরিফ রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন। আফগান বাহিনীর মনোবল তৈরি করতে গত ১১ তারিখে আশরাফ গনি মাজার শরিফ সফর করেন।
তারপরও বিশ্বাস রাখা কঠিন, কারণ একের পর এক প্রদেশ দখল করে চলছে তালেবানরা। তারা এরই মধ্যে ৯টি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে।
আফগান সরকারের জন্য দেশকে রক্ষার লড়াই ক্রমেই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে- সরকারি বাহিনী, একটি সংগঠনের সাথে ব্যর্থ হচ্ছে?

যুদ্ধে পরাজয়ের ব্যর্থতা চাপিয়ে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন।
আশরাফ গনি মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন, কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছেন।
সরকার এখন দেশ রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছে। কিন্তু আশংকা রয়েছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের পতন ঘটবে।

গত ১২ ই আগস্ট তালেবান নতুন করে গজনী শহর দখল করেছে। সেখানকার গভর্নরকে গ্রেফতার করেছে। গজনী আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কাবুলের দিকেই এগুচ্ছে তালেবান।

এদিকে ১৩ আগস্ট বিবিসির খবরে তালেবানদের দ্বারা আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার দখলের খবর প্রচার করা হয়েছে।
তাছাড়া দেশটির আরো কয়েকটি শহরের সরকারি বাহিনীর নাটকীয় পতন ঘটেছে বলে জানা গেছে। যদিও তালেবান এখনো বিজয় ঘোষণা করেনি।

ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে তারা আফগানিস্তানের মার্কিন দূতাবাস থেকে আটকেপড়া কর্মীদের উদ্ধারে তিন হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থা বলছে- তালেবানরা ১ সপ্তাহের মধ্যে ৯টি প্রদেশ দখল করেছে। ৯০ দিনের মধ্যে তারা কাবুল দখল করতে পারে।

ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা প্রত্যাহারের সময় বলেছিলেন- আফগান সেনাদের নিজেদের রক্ষা করার মতো ক্ষমতা রয়েছে। আধুনিক অস্ত্র রয়েছে এবং রয়েছে ৪ লাখ প্রশিক্ষিত সেনা।
কিন্তু আফগান সরকারের ব্যর্থতা ও তালেবানদের অগ্রগতি লক্ষ্য করলে তালেবান যে শিগগিরই ক্ষমতায় আসছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তালেবানদের সাথে এরই মধ্যে বৈঠকে বসেছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীন। ইরান ও পাকিস্তান তালেবানদের সহযোগিতা করছে বলে জানা যাচ্ছে।