অবিশ্বাস্য খেলছে বাংলাদেশ’

18

কিছুক্ষণ গা গরমের ফুটবল। কিন্তু মিরপুর স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়েরা খেললেন যতটা, ঘামলেন তার চেয়েও বেশি। অনেককে তো রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠতেও দেখা গেল। যা দেখে একটু পর ড্রেসিংরুমের সামনে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ডাকলেন, ‘কাম অন বয়েজ…এবার একটু গলা ভিজিয়ে নাও।’ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসির শুধু তাতেই হলো না। বোতলের ঠান্ডা পানি দিয়ে তোয়ালে ভিজিয়ে সেটি দিয়ে শরীরটাও মুছে নিলেন। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়দের গরমে হাঁসফাঁস করার ব্যাপারটি ভালোই বোঝা গেল।
সেটাই স্বাভাবিক। জোহানেসবার্গ ও ডারবানের ১৮-১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে হঠাৎ করেই ঢাকার ৩০ ডিগ্রিতে। বাড়তি সমস্যা আর্দ্রতা। এই সফরে যেটিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় প্রতিপক্ষ বলেও মানছেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। কাল দুপুরে মিরপুরে অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এখানকার গরম সব সময়ই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সবার আগে আমাদের এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। এই গরমে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে হবে, তাই সতর্ক থাকতে হবে যেন খুব বেশি শক্তি ক্ষয় না হয়।’
তাপমাত্রা নিয়ে ভাবনাটা তো আছেই। কিন্তু মাঠে যাদের বিপক্ষে খেলতে হবে, সেই বাংলাদেশকে নিয়ে কী ভাবছেন? এবার ডু প্লেসির কণ্ঠে প্রতিপক্ষকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা, ‘বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে, সেটা অবিশ্বাস্য। বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও এটা ভালো। কোনোভাবেই এখন আর তারা ছোট দল নয়। বড় দলগুলোকে তারা নিয়মিত হারাচ্ছে। ভারতকে ওরা যেভাবে হারিয়েছে, সেটি ছিল অসাধারণ।’
তার মানে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা দেখেছেন ডু প্লেসি? প্রোটিয়া টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের জবাব, ‘ভারত সিরিজের কিছু ম্যাচ আমি দেখেছি। দারুণ কিছু তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসছে বাংলাদেশের। যেটা বললাম, বাংলাদেশকে ভালো করতে দেখাটা দারুণ। আমাদেরও বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে। ওরা সত্যিই দারুণ খেলেছে।’ সফর শুরুর আগের প্রস্তুতিতেও যে এটি প্রভাব ফেলেছে, স্বীকার করলেন সেটিও, ‘বিমানে ওঠার আগে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে আমাদের। আমাদের বিপক্ষে সিরিজে আমরা চাইব উল্টো ফল। দারুণ শক্তিশালী দল আমাদের। বাংলাদেশকে হারাতে আমরা সেরা খেলোয়াড়দের খেলাব এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
একে তো বাংলাদেশের দুর্দান্ত ফর্ম, তার ওপর দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য কিছুটা বৈরী কন্ডিশন। বড় চ্যালেঞ্জই কি অপেক্ষা করছে প্রোটিয়াদের জন্য? জবাবটা দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ‘উপমহাদেশের কন্ডিশন এখন আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাথাব্যথার কারণ নয়। লক্ষ করলে দেখবেন, দক্ষিণ আফ্রিকা গত কয়েক মৌসুমে উপমহাদেশে ভালো ক্রিকেট খেলেছে। আমরা শ্রীলঙ্কার ও ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। আমার তো মনে হয় উপমহাদেশের কন্ডিশনেই দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের সেরাটা বেরিয়ে আসে।’ ডু প্লেসি মনে করিয়ে দিলেন, আইপিএল খেলার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়দের অনেকেরই উপমহাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে পরিচয়টা আরও গাঢ় হয়েছে।