নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরে আসছেন জুনে

15

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর নিয়ে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন কেটে গেছে। বকেয়া তিস্তার পানিবণ্টন ও স্থলসীমান্তের মধ্যে অন্তত একটি ভারতের সংসদে পাস হওয়ার পরে দু’দেশের কূটনৈতিক মহলে প্রবল উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সেই উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চুক্তি পাস হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফোন করে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি দ্রুত ঢাকা সফরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

মোদি ইতিমধ্যেই ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চীন সফরও করবেন। কিন্তু প্রতিবেশী বাংলাদেশ সফর করতে পারছিলেন না বকেয়া চুক্তির মধ্যে অন্তত একটিও না হওয়ায়। এখন সেই বাধা কেটে গিয়েছে।

মোদির ঢাকা সফরকে দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলস্টোন হিসেবে চিহ্নিত করার সব রকম প্রয়াস চলছে বলে জানা গেছে। সেজন্য সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হবে। অনেক কটি প্রটোকল নবায়ন করা হবে। নতুন করে ঋণ সাহায্যেরও প্রতিশ্রুতি দেয়া হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মোদির ঢাকা সফরের সূচি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। তবে একটি সূত্র আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহেই এ সফর হতে পারে বলে জানিয়েছেন।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, এ সফর সামান্য পিছিয়ে যেতে পারে। তবে জুনেই যে সফর হচ্ছে তা একরকম নিশ্চিত বলে জানা গেছে।

কয়েক দিন আগেই স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস করানোর নিশ্চিত সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে যেসব আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো সফরের সময় কার্যকর করার ব্যাপারে ভারত উদগ্রীব। এজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ চলছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রকাশ পেয়েছে সংসদের দুই কক্ষে স্থলসীমান্ত চুক্তি কার্যকর সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনায় ভারতের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির আবেগময় আলোচনায়। আর ভারত সরকারও সহমতের বার্তা প্রতিবেশী বাংলাদেশের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে। কোনরকম রাজনৈতিক সংর্কীর্ণতাকে এ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত প্রশ্রয় দেয়া হয়নি। বরং সুষমা স্বরাজ সংসদে বার বার সহমতের প্রযোজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশকে খুশি করতে।

গত বছর মোদির বিজয়ের পর পরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানানোর সময়ই নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিযেছিলেন।

গত বছরে মে মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করে মোদি যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তাতে হাসিনাকেও ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

এ বছরের মার্চে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জয় শঙ্করের হাত দিয়ে মোদি হাসিনাকে যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে দ্রুত ঢাকা সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনও আগ্রগতি না হওয়ায় এবং সীমান্ত চুক্তি নিয়ে শেষ মুহূর্তে রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হওয়ায় মোদির সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাত গুটিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তৈরি হয়েছে প্রবল উচ্ছ্বাসের আবহাওয়া। আর এ আবহাওয়াতেই মোদি ঢাকা-যাত্রায় আসবেন।

মোদির সফরের পর পরই বাংরাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ভারত সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দিল্লির সূত্রে বলা হয়েছে।

এদিকে ত্রিপুরা সরকার স্থলসীমান্ত চুক্তি সংসদে পাস হওয়ায় অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও চুক্তি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।