‘আমার শরীর, আমার সিদ্ধান্ত’

107

আলিয়া ভাট এবং মাধুরি দিকশিতের পর এবার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে নারীর অধিকার নিয়ে ভারতীয় অভিনেত্রী দিপিকা পাড়ুকোণও। নারীদের নিয়ে সামাজিক সচেতনতামূলক #ভোগএম্পাওয়ার সিরিজের আওতায় মুক্তি পাওয়া ‘মাই চয়েস’-এ দেখা গেল তাকে।

দুই মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই চলচ্চিত্রটি তৈরি করেছেন ‘ককটেইল’ খ্যাত নির্মাতা হোমি আদাজানিয়া। নারীর শরীর, যৌনতা এবং জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নারীরই – এমন বক্তব্য তুলে ধরে ভিডিওটি।

‘মাই চয়েস’-এ দিপিকার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন মুম্বাইবাসী আরও ৯৮ জন নারী। এদের মধ্যে অতি সাধারণ নারী যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন নির্মাতা যোয়া আখতার, অভিনেত্রী নিমরাত কাউর, চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়া, হেয়ার স্টাইলিস্ট আধুনা আখতার, ফ্যাশন ডিজাইনার আনাইতা আদাজানিয়াদের মতো তারকারাও।

ভিডিওটির শুরু হয় দিপিকার কণ্ঠে “আমার শরীর, আমার মন, আমার সিদ্ধান্ত” সংলাপটি দিয়ে। সাদাকালো দৃশ্যপটে একে একে বিভিন্ন বয়সী এবং শারীরিক কাঠামোর নারীর অবয়ব ভেসে উঠতে উঠতে আরও শোনা যায়, “আমার আত্মা নিরাভরণ হলেও আমার যেমন খুশি তেমন পোশাক পরাটা আমার সিদ্ধান্ত। সাইজ জিরো কিংবা সাইজ ফিফটিন হওয়াটাও আমার সিদ্ধান্ত। আমার আত্মার তো কোনো আকার নেই।”

দিপিকার কণ্ঠে আরও শোনা যায়, “বিশ্ব ব্রক্ষ্মণ্ডের গতিকে থামিয়ে দেওয়া যেমন সম্ভব নয়, সূর্যে র আলোকে যেমন করে হাতের তালুতে বন্দি করা যায় না, তেমনিভাবেই সুতি কিংবা রেশমের কাপড়ের ঘেরাটোপে আমার আত্মাকে বেঁধে ফেলার ধারণা ভুল। তোমার মানসিকতা কারারুদ্ধ। একে মুক্ত কর। আমার দেহ মুক্ত। আমাকে আমার মতোই থাকতে দাও।”

সমাজে বিয়ে, যৌনতা, সন্তান নেওয়ার বিষয়ে নারীদের নিয়ে প্রচলিত ধারণা সম্পর্কে আরও বলা হয়, “আমার সিদ্ধান্ত। আমি বিয়ে করবো, না করবো না। বিয়ের আগে যৌন সম্পর্কে জড়াবো, বিয়ের বাইরে গিয়ে যৌন সম্পর্কে জড়াবো, নাকি জড়াবো না – এটা আমার সিদ্ধান্ত। আমার সিদ্ধান্ত, আমি অল্প সময়ের জন্য কাউকে ভালবাসবো, নাকি সারা জীবনের জন্য। আমার সিদ্ধান্ত আমি কাকে ভালবাসবো। একজন পুরুষকে, একজন নারীকে, নাকি দুজনকেই। মনে রেখো, তুমি আমার সিদ্ধান্ত। আমি তোমার সুবিধা নই।”

“আমার কপালের টিপ, আমার আঙুলের আংটি, তোমার পদবি আমার নামের শেষে যুক্ত করা – এর সবই অলঙ্কারমাত্র। এগুলো যে কোন সময়েই পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু তোমার প্রতি আমার ভালবাসার কোনো পরিবর্তন হবে না।”

“আমার সিদ্ধান্ত আমি কখন ঘরে ফিরবো। রেগে যেয়ো না, যদি আমি ভোর চারটায় ফিরি। বোকা বোনো না, যদি সন্ধ্যা ছয়টায় ফিরি। আমার সিদ্ধান্ত তোমার সন্তানের মা আমি হবো কি না। আমার সিদ্ধান্ত, আমার সামনে থাকা সাতশ’ কোটি মানুষের মধ্য থেকে তোমাকে বেছে নেব কি না।

সবশেষে বলা হয়, “আমার সিদ্ধান্তগুলো আমার আঙুলের ছাপের মতো। এগুলোই আমাকে স্বতন্ত্র করে।”

এর আগে ‘কুইন’ খ্যাত নির্মাতা ভিকাস বেহল তৈরি করেছিলেন রাতে নারীদের বাড়ি ফেরা বিষয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছিলেন আলিয়া ভাট। পরবর্তীতে ‘লাড়কে রুলাতে নেহি’ নামের আরেকটি ভিডিওচিত্র প্রকাশ করা হয় এই সিরিজের আওতায়, যেখানে মাধুরি দিকশিতকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বলতে শোনা যায়, “ছোটবেলা থেকে আমরা শিখিয়ে আসছি, ছেলেরা কাঁদে না। সময় এসেছে তাদের শেখানোর, ছেলেরা কাঁদায় না।”