রামগঞ্জে ব্লগার ওয়াশিকের দাফন

96

ঢাকার তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান তুষার বাবু ওরফে ওয়াশিক বাবুকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিনি রামগঞ্জ উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর হাজীপুর গ্রামের নোয়াবাড়ির টিপু সুলতানের এক মাত্র ছেলে।
ওয়াশিকুরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ওয়াশিকের আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নিহত ওয়াশিকের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ জানান, ওয়াশিক খুন হওয়ার পর তার জাতীয় পরিচয় সূত্র ধরে তেজগাঁও থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ১১টায় তাদেরকে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যান থানায়। সেখান থেকে পুলিশি কার্যক্রম শেষ করে রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে তার লাশ গ্রহণ করেন পরিবারের লোকজন। ভোর ৪টায় গ্রামের বাড়িতে তার লাশ নিয়ে আসার পর সকাল সাড়ে ৯টায় স্থানীয় দাইগড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম জানাজায় ইমামতি করেন। পরে ৫নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের আবদুল করীম হাজী বাড়ির (নোয়াবাড়ি) পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় নিহতের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ আরো জানান, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, মূলত লেখালেখির কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
একমাত্র বোন আসরাফী সুলতানা সিমু কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ২০ বছর আগে আমরা মা হারাই, বাবা আমাদের ভাই-বোন দুজনকে কোলেপিঠে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন।
ছোট বেলা থেকেই তার ভাই ওয়াশিক বাবু খুবই মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছিল। সে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত ছিল না। শুনেছি ব্লগে একটু লেখালেখি করত, এজন্য জঙ্গি সংগঠনের কেউ তাকে হত্যা করতে পারে। এ ছাড়া আমার ভাইয়ের কোনো শত্রু ছিল না।
স্থানীয়রা জানান, ওয়াশিকুর রহমান ২০০৪ সালে রামগঞ্জ উপজেলার ৫নম্বর চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে এসএসসি, তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করে ঢাকার মতিঝিলে ফারইস্ট ট্রাভেলস এ্যাভিয়েশনে কর্মরত ছিলেন। তার আচরণ খুব ভালো ছিল। তার সাথে কখনও কারো মতানৈক্য হয়নি। এ রকম ছেলেকে মেরে ফেলা মেনে নেয়া কষ্টকর।