মুক্তি চাইলেন অর্থমন্ত্রী!

43

বয়স তো ৮১ হয়েছে। আর কত! এই বয়সে এসে অর্থমন্ত্রীর মত একটি পদ সামলানো তো আর চাট্রিখানি কথা নয়। বিভিন্ন সময় এ পদে থাকতে নিজের অপারগতার কতা জানিয়েছিলেন। এবার সরাসরি ‘মুক্তি’ চাইলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তাতেও কিছু হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বলে দিয়েছেন, এখনই মুক্তি নয়!

বলা হচ্ছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল অব্দুল মুহিতের কথা। সবাই যখন একটু মন্ত্রীর পদের জন্য হাপিত্যেশ করে মরেন, তখন তিনি কিনা স্বেচ্ছায় এ পদ ছাড়তে চাইছেন।

কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি। ‘অব্যাহতি’ নয়, তিনি ‘অবসর’ শব্দটি প্রয়োগ করেছিলেন। সঙ্গত কারণেই এমন একজন সিনিয়ার এবং বিজ্ঞ মন্ত্রীকে ছাড়তে চাইলেন না প্রধানমন্ত্রী। তাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন_ অব্যাহতি বা অবসর নয়, বর্তমান গুরুদায়িত্বই তাকে পালন করতে হবে। প্রয়োজনে কিছুদিন ছুটি নিতে তাকে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। অগত্যা তার পরামর্শই শিরোধার্য।

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে বেশ কয়েক দিন ছুটি কাটিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ছুটির অবসরে হেয়ার রোডে সরকারি বাসভবনে বসে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ লেখার কাজ অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছেন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে নিজের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে অবশ্য জরুরি ফাইল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও দিয়েছেন।

এর আগেও একাধিকবার মন্ত্রিসভায় না থাকার ইচ্ছে ব্যক্ত করেছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে সচিবালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মন্ত্রী হিসেবে তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন না। এমন ইচ্ছার কথা শুনলেও প্রধানমন্ত্রী তা কখনও আমলে নেননি।

স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন আবুল মাল আবদুল মুহিতকে মন্ত্রিসভায় তার সহকর্মীরা খুব পছন্দ করেন। স্পষ্ট কথা বলায় তার জুড়ি নেই। তার এই অকপট সারল্যে মাঝেমধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন অর্থমন্ত্রী। যেমন :সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর ‘চার হাজার কোটি টাকা তেমন কিছুই নয়’_ তার এ বক্তব্য সরকারকেও কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।গত সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনীতি ছাড়ার ইচ্ছের কথা বলেছিলেন সিলেট-১ আসনের এমপি মুহিত। তাকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছে। তিনি বিজয়ীও হয়েছেন। আবারও অর্থমন্ত্রীর কঠিন দায়িত্ব তারই ওপর অর্পণ করা হয়েছে।

আগামী বাজেট অধিবেশনের পর আবুল মাল আবদুল মুহিত দায়িত্ব পালনে আর রাজি নাও হতে পারেন। তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতারা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন অর্থমন্ত্রীর কথা ভেবে রেখেছেন। সে ক্ষেত্রে অনেক নামের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নামটিই সবার আগে রয়েছে বলে জানা গেছে।