‘খোকন খলনায়ক, শিরিন এজেন্ট’

194

ডাকসুর সাবেক জিএস, নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনকে খলনায়ক ও তার স্ত্রী মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাকে সরকারের এজেন্ট আখ্যায়িত করেছেন ৯০’র ছাত্রনেতা সানাউল হক নিরু।

নীরু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার স্ট্যাটাসটি দেন তিনি

স্ট্যাটাসে নীরু লিখেছেন, “খায়রুল কবির খোকন যদি নরসিংদীতে মাঠে থাকতো,সত্যিকার অর্থেই আন্দোলন করতো, তবে মনোহরদীর পরিবহণ এমকি শিবপুর, ইটাখোলা, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, বাজিতপুর, আশুগঞ্জ, বি.বাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, সিলেট বিভাগের সব লাইনে সব গণপরিবহন, কয়লা ও পাথরের ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান বিরতিহীনভাবে চলছে কিভাবে? এ যে দেখছি আন্দোলনের নামে এক তামাশা মাত্র।”

নীরু বলেন, “সাবেক ডাকসুর জিএস, নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, দেশনেত্রীর একান্ত স্নেহভাজন, বিশ্বস্তদের মধ্যে অন্যতম একজন নাকি তিনি (খোকন)। আমি এবং বাবলু ভাই ৮০ – ৮১ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। ঢাকা কলেজে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠালগ্নে অসীম সাহসী ভূমিকার কারণে, তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরু-বাবলু নাম দুটি খুবই পরিচিত ছিল। তখন মুহসীন হলের সভাপতি ভৈরবের মনির ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক ফেনীর কামাল ভাই, ৮০-র ডাকসু নির্বাচনে জিএস হিসেবে ছাত্রদল থেকে একমাত্র বিজয়ী আমাদের প্রিয় জাকির ভাই, পরবর্তীতে বিসিএস পাস করে চাকরিকালীন সময়ে দেশনেত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী তখনো উনার এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

ফেসবুকে নীরু আরো লেখেন, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রথম আহ্বায়ক মনির ভাই এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন খোকন ভাই (কুমিল্লা), বাদল ভাই( বিক্রমপুর), কামাল ভাই (ফেনী), জাকির ভাই (কিশোরগঞ্জ)। এই পাঁচজনের আহ্বায়ক কমিটি হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রথম কমিটি এবং পরে তা মনির কামাল ভাইকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হলে এদের হাত ধরে পরবর্তীতে আমরা এই মুহসীন হল থেকেই দলের দুঃসময়ে স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সংগ্রামে একদিন সারা বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিয়েছি। ওই সময়ে হল কমিটির নির্বাচনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তারা প্রত্যেকেই ছিল অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য, যোগ্যতা এবং ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যাদের কাছে এই খোকন, মিলন এবং নাজিমুদ্দিন আলমরা একবারের জন্যও ভোটে বিজয়ী হতে পারেনি, এরা আমার বাবলু ভাইয়ের অতি প্রিয় ছোটভাই, অত্যন্ত যোগ্য, মেধাবী ছাত্রনেতা হিসেবে এরা শুধু হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশে যোগ্য ও মেধাবী ছাত্রদল নেতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। অভি, রানা সিকদার, রতন, ডিউক, সুজন (এমপি), রফিকুল ইসলাম জগলু, এমদাদ, শাহজাহান (গফরগাঁও), সাইদ সোহরাব, লাবলু, জাকির হোসেন কামাল, খুলনার ফারুক এবং অসংখ্য ছাত্রদল নেতা তৎকালীন মুহসীন হল থেকে সারা বাংলাদেশে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে।’

নীরু বলেন, “পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মোনাফেকদের অন্যতম বিশ্বাস ঘাতক, নরসিংদীর রাজনীতিতে এক খলচরিত্রের নাম খায়রুল কবির খোকন, যে নরসিংদীর মাটিতে জন্ম নেয়া সাবেক কেবিনেট সচিব আব্দুল মোমেন খান রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একান্ত বিশ্বস্তদের একজন। ড. আব্দুল মইন খানের পিতা আব্দুল মোমেন খান এই দলটির প্রতিষ্ঠালগ্নে দলের এগারো জনের আহ্বায়ক কমিটির একজন এবং পরবর্তীতে নরসিংদী সদর আসন থেকে এমপি ও খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। আমাদের নরসিংদী জেলার আর এক কৃতিসন্তান হাফিজ ভাই আমৃত্যু এই দলটির কেন্দ্রীয় কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও নরসিংদী জেলার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক/সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন এডভোকেট কফিলউদ্দিন এবং উনি আমার জন্মস্থান মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুরের বাসিন্দা। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাবেক এমপি আব্দুল আলী মৃধার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, নরসিংদী সদরের চার বারের নির্বাচিত এমপি শামসুদ্দিন এহছাক, নরসিংদী কলেজের সাবেক ভিপি ও সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি মিয়া সেলিম, মাধবদীর সালেহ ভাই, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা ফজলু ভাই, যুবদলের আরেক কেন্দ্রীর নেতা অ্যাডভোকেট নেছার ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এককালীন সভাপতি, সূর্যসেন হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ খোকন, নরসিংদীর জনপ্রিয় নেতা প্রিন্সিপাল নওশের, বোরহান , শামসুদ্দিন এহছাক এমপির ফ্যামিলি বিশেষ করে নরসিংদী কলেজ ছাত্র সংসদের বিভিন্ন সময়ে নির্বাচিত ভিপি/ জিএসরা আজকে সবাই দলের সবরকম দায়িত্ব ও পদ পদবি থেকে নির্বাসিত। এমনকি পলাশে ড. আব্দুল মইন খানের নির্বাচনী এলাকায় গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে এলদেম কবিরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করে, তার সঙ্গে খোকনের পরামর্শ ও গুটির কারণে শেষ পর্যন্ত বিএনপির এক অংশের ভোট আওয়ামী লীগের নৌকায় দিয়ে ড. আব্দুল মইন খানকে পরাজিত করার সকল আয়োজকও এই খায়রুল কবির খোকন।”

তিনি বলেন, “এসকল বিশ্বাস ঘাতকরাই আজকে নেতা, এমনকি দলের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এদের আন্দোলন ও নেতৃত্বের কৌশল যেন, লা-জবাব। ওয়ান ইলেভেনে (১/১১) ব্রিগেডিয়ার ফজলুল বারী, আমিন সাহেবদের বদৌলতে এরা স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজনও গ্রেফতার হয়নি।”

নীরু আরো বলেন, “মান্নান ভূইয়াদের কথা বাদই দিলাম, যেখানে জিয়া পরিবারের সবাই গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হলো, এমনকি শেখ হাসিনাকেও দীর্ঘ সময়ে বন্দিত্ব বরণ করতে হয়েছে, শিরিন-খোকনদের কাছে, আমান, মিলন, নাজিমুদ্দিন আলম, টুকু, এ্যানী এদের কাছে কি কোনো জাদুর কাঠি আছে? এরা সবাই বর্তমান সরকারের আমলে বহাল তবিয়তেই আছেন। একমাত্র খোকনই ব্যতিক্রমধর্মী নেতা যে এখনো নিজের বাসায় ঘুমান। আর নরসিংদীতে তার ম্যানেজ ম্যানেজ আন্দোলনের খেলা নিয়ে অনেকেই মুখ টিপে হাসেন। এমনকি এসপিও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেননা তার বাসা থেকে বেলানগর-সিলেট মহাসড়কটি দুইশ গজ দূরে। উনি সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সিলেট রোডের কাছাকাছি যাওয়ার পর পুলিশ বলে আর সামনে আসবেন না, তিনিও সুবোধ বালকের মতো সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, শুরু হয়ে যায় ফটোসেশন, অতঃপর ফেসবুক, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ঝড় উঠে।”