মৃত্যুদণ্ড হতে পারে মুরসির!

16

বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগে মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামী মঙ্গলবার। সেই রায়ে মুরসির মৃত্যুদণ্ড না হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, মুরসিকে পদচ্যুত করার দুই বছর পর এ রায় দেওয়া হচ্ছে।

মুরসির সঙ্গে এ মামলায় আরও ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে তিন বিক্ষোভকারীকে হত্যা ও অনেককে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুরসি ওই সময় নিজের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা রেখে ডিক্রি জারি করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, তাঁর ডিক্রি, সিদ্ধান্ত বা জারি করা আইনের বিরুদ্ধে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। ডিক্রির আওতায় তাঁর সিদ্ধান্ত কোনো কর্তৃপক্ষ, এমনকি বিচার বিভাগও বাতিল করতে পারবেন না। মুরসির এমন ঘোষণার পরই সারা দেশে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।

এদিকে মুরসি এ মামলা ছাড়া আরও দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড পেতে পারেন। মামলার দুটির একটির অভিযোগ হল, বিদেশি শক্তির চর হিসেবে কাজ করা। আর অন্যটির অভিযোগ ২০১১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক বিরোধী আন্দোলনের সময় জেল থেকে পলায়ন। আগামী ১৬ মে এ দুটি মামলার রায় দেওয়ার কথা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মঙ্গলবার মুরসিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ, বিচারকেরা ইতিমধ্যে সরকার মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের কালো তালিকাভুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর রায় দিয়েছেন।

মুরসির শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ২০১৩ সালের ৩ জুলাই দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট সিসি কর্তৃপক্ষ ব্রাদারহুডের সমর্থকদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়ন চালায়। এতে অন্তত ১৪০০ সমর্থক নিহত হন। হাজারো সমর্থককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ব্রাদারহুডের কয়েক শ সমর্থকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এমন রায়কে ‘সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।