পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অবাধ যৌনতা চলতো

77

কলকাতায় যে ফ্ল্যাটে এক নারী ও দুটি কুকুরের কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অবাধ যৌনতা চলতো বলে আভাস পেয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই কঙ্কালগুলির হদিশ দিয়েছিলেন পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য– কঙ্কাল হয়ে যাওয়া ওই নারীর ভাই।

কলকাতার পুলিশ বলছে, কঙ্কাল হয়ে যাওয়া নারী– দেবযানী দের ভাই পার্থ দের কিছু লেখা আর একটি ডায়েরি খুঁটিয়ে পড়ার পরেই তারা এখন নিশ্চিত যে, ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যৌনতার সম্পর্ক ছিল।

পুলিশ কর্মকর্তাদের কথায়, পার্থ দে ওই ডায়েরিতে বর্ণনা দিয়েছেন যে, কীভাবে তার বড় বোন দেবযানীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

সেই সম্পর্কের আভাস পেয়ে যান তাদের মা, যিনি ২০০৭ সালে মারা গেছেন। ওই সম্পর্কের কারণে মা তার বড় বোনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠেন বলেও পার্থ তার ডায়রিতে লিখেছেন।

এই অভিযোগও করেছেন তিনি যে, বোনের সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন ধরাতে তার ঘরে একজন পরিচারিকাকেও রেখেছিলেন তার মা– যাতে ওই পরিচারিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু মায়ের সেই ধারণা ভুল ছিল বলে পার্থ দে ডায়েরিতে লিখেছেন।

কোনো জায়গায় আবার উল্লেখ করেছেন যে, একজন ডাইনির জন্যই তাদের পরিবার শেষ হয়ে গেল।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার পার্থ দের বড় বোন ও দুটি পোষা কুকুরের যে কঙ্কালগুলি পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলির ফরেনসিক তদন্ত চলছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি দেবযানী ডিসেম্বরে মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে মাত্র ছ’মাসে কোনো মানুষের শরীর কঙ্কালে পরিণত হওয়া অস্বাভাবিক।

তাই দেবযানী কবে মারা গিয়েছিলেন বা পার্থর দাবি মতো তিনি কুকুরগুলি মারা যাওয়ার দুঃখে অনশনেই মারা গেছেন না কি তাকে খুন করা হয়েছিল, সেগুলোও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আর ঘরের মধ্যে তিনটি মৃতদেহ থাকলেও কেন নিকট প্রতিবেশীরা কোনো গন্ধ পেলেন না, সেটাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

পার্থ দেই পরিবারটির একমাত্র জীবিত সদস্য– যাকে মানসিক চিকিৎসার জন্য একটি সরকারি হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের সামনে এখনো তিনি মুখ খোলেননি বলে হাসপাতাল সূত্রগুলি জানিয়েছে।

বুধবার রাতে পরিবারের কর্তা– পার্থ-দেবযানীর বাবা ৭৭ বছর বয়সী অরবিন্দ দে গায়ে আগুন লাগিয়ে মারা যাওয়ার পরেই এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা