পিন্টুর চিকিৎসা করতে দেননি জেলার-ডা. রইস উদ্দিনেরর অভিযোগ

18

বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাতদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু মারা গেছেন।

রোববার বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে তার মৃত্যু হয়।

তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইস উদ্দিন দাবি করেন, হাসপাতালের বাইরেই পিন্টু মারা গেছেন। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

ডা. রইস উদ্দিন আরো বলেন, ‘শনিবার কারাগার থেকে রামেক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সে অনুযায়ি তিনি শনিবার কারাগারে পিন্টুর চিকিৎসার জন্য গেলেও সিনিয়র জেল সুপার তাকে পিন্টুর চিকিৎসা করতে দেন নি।’

তবে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান জানান, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু নানাবিধ অসুখে ভুগছিলেন। হার্ট, কিডনি, ডায়াবেটিকস, ব্লাডপ্রেসারসহ চোখ ও বুকের সমস্যা ছিলো তারা। রোববার বেলা ১২টার দিকে তিনি কারাগারের মধ্যে বুকের ব্যথা অনুভব করেন ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে কারাগার থেকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে পিন্টু মারা যান।

কারা চিকিৎসক এসএম সায়েম জানান, বেলা ১১টার দিকে নাসিরুদ্দিন পিন্টু অসুস্থ বোধ করেন। তার বুকের ব্যথা তীব্র হলে দুপুর ১২টার দিকে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে রামেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইস উদ্দিন জানান, কারাবন্দি নাসিরুদ্দিন পিন্টু হার্ট, কিডনি, ডায়াবেটিকস, ব্লাডপ্রেসারসহ চোখ ও বুকের সমস্যায় ভুগছিলেন। কারাগার থেকেই শনিবার রামেক পরিচালকের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। সেই অনুযায়ি শনিবার কারাগারে তিনি পিন্টুর চিকিৎসার জন্য যান। কিন্তু সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান তাকে পিন্টুর চিকিৎসা করতে দেন নি।’ তিনি বলেন, ‘রোগীর অবস্থা ভালো ছিলো না বলেই পরের দিনই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

এবিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান জানান, ২৫ এপ্রিল তার ফলোআপ চিকিৎসার ডেট ছিলো। ওই দিন তাকে রামেক হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

শনিবার চিঠি দেয়ার পরেও কেনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে নাসিরুদ্দিন পিন্টুর চিকিৎসা করা হয় নি এ প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান কোনো কথা না বলেই রামেক হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মতিউর রহমান মন্টু কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ এনে বলেন, শনিবার নাসিরুদ্দিন পিন্টুর সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন। এ সময় পিন্টু তাকে জানান যে, কারা কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো তাকে ওষুধ দিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ২০০৯ সালে গ্রেপ্তার হন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু। পিন্টুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়। এ বিচারে তার ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়।

গত ২০ এপ্রিল তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়। এর আগেও গত সপ্তাহে হার্টের সমস্যায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।