সাকা চৌধুরীর ফাঁসি বহাল

15

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন সু্প্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সাকা চৌধুরীর আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে বুধবার (২৯ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

গত ৭ জুলাই যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আপিল শুনানি শেষ হওয়ায় ২৯ জুলাই রায়ের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। গত ১৬ জুন শুরু হয়ে ১৩ কার্যদিবসে এ আপিল শুনানি শেষ হয়।

৫ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত তিন কার্যদিবসে সাকা চৌধুরীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান। এর আগে প্রথমে আসামিপক্ষের শুনানিতে ১৬ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য-জেরা এবং রায় সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) উপস্থাপন করেন এসএম শাহজাহান।

অন্যদিকে গত ৩০ জুন এবং ১ ও ৭ জুলাই তিন কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে আপিল করেন সাকা চৌধুরী। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।

এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে আপিল বিভাগে আসা পঞ্চম আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হলো, যেসব রায়ে চার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীই পেয়েছেন ফাঁসির আদেশ।

গত ১৬ জুন সর্বশেষ চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল একাত্তরের বদর প্রধান আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এ আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার সুযোগ পাবেন মুজাহিদ।

২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ‘মিরপুরের কসাই’ আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড। তাকে দেওয়া ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাজা নির্ধারণ করে দিয়ে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ।

গত ১২ এপ্রিল কার্যকর করা হয় জামায়াতের অপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের নৃশংস যুদ্ধাপরাধের হোতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়। গত বছরের ৩ নভেম্বর তাকে দেওয়া ট্রাইব্যুনাল-২ এর ফাঁসির রায় বহাল থাকে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে।

অন্যদিকে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ট্রাইব্যুনাল-১ ফাঁসির আদেশ দিলেও গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর রিভিউ আবেদনের মাধ্যমে ফাঁসির রায় পুনর্বহালের আরজি জানানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ।