ব্রাজিলের গম আসলে দেখতে খারাপ

22

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম নিয়ে পত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানালেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলতে এবং আমাকে হেয় করতে একশ্রেণীর পত্রিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করছে। তাছাড়া যেসব ছবি দেখানো হচ্ছে সেই ছবির সঙ্গে আমদানি করা গমের কোনো মিল নেই। ব্রাজিলের গম আসলে দেখতে খারাপ, তবে গুণগত মান ঠিক আছে।

মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) সকালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানের এ সংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

প্রশ্নকর্তা জানতে চান যারা পচা, নিম্নমানের গম আমদানিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কি-না?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বি’ নির্দেশে যে প্যারামিটার দেওয়া ছিলো পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে সেই গম আমদানি করা হয়েছে। যখন বলা হলো- গম খারাপ, পচা, নিম্নমানের, তখন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সিলগালা করা অবস্থায় আবার নমুনা গ্রহণ করা হয়। সেই নমুনা আমাদের খাদ্য অধিদপ্তরের ল্যাবরেটরি, সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা করি। পরীক্ষায় দেখা যায়, প্রথম ‘বি’ নির্দেশ অনুযায়ী যে গম আমদানি করা হয়েছে, সেটা আমদানি অধিদপ্তরের বিষয়। এরপর দীর্ঘ ৪/৫ মাস পার হয়ে গেলেও দেখা যায় গমের গুণগত মান নষ্ট হয়নি, ঠিক আছে।

তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকার নিউজ এসেছে এই গম পচা, নিম্নমানের। আসলে এর কোনো ভিত্তি নেই। ২ লাখ মেট্রিক টন গম এসেছিলো। তার মধ্যে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৫ টন গম ৩০ জুন পর্যন্ত বিলি হয়ে গেছে। আমাদের কাছে আর মাত্র ২৫ হাজার মেট্রিক টন গম রয়েছে। বিলি হওয়ার পর এই চার মাসে কোনো অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।

কুষ্টিয়া কুমারখালির সংসদ সদস্য নিজেই আবার গম সম্পর্কে বলেছেন, যে কথা বলেছিলাম তা সঠিক নয়। উপজেলা চেয়াম্যানের সঙ্গে একটা প্রজেক্টের বিরোধের জের ধরে গম নিয়ে নাটকীয়তার অবস্থা সৃষ্টি করেছেন তিনি। পত্র-পত্রিকায় নিউজ এসেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বে এ বিরোধ।

মন্ত্রী বলেন, এ গম নিয়ে হাইকোর্টে মামলা পরিচালনা করছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন। হাইকোর্টে নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিপোর্ট, অধিদপ্তরের রিপোর্ট, ঢাবি পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। আমদানি করার ক্ষেত্রে প্রি-ফিটমেন্ট সার্টিফিকেট আসে। প্রি-ফিটমেন্ট সার্টিফিকেটও বলেছে খাবার উপযোগী। আমি জানি না কি ভিত্তিতে এসব নিউজ।

তিনি বলেন, পোকার কথা বলা হচ্ছে, যে গমের ছবি দেখানো হচ্ছে, সেই গমের সঙ্গে আমাদের গুদামের গমের কোনো ছবির মিল নেই। বলা হচ্ছে পোকা খাওয়া গম, পরিচর্যা না করলে, যে কোনো গমে ওষুধ না দিলে পোকা ধরবেই। একটি পত্রিকায় আমার বিকৃত ছবি দিয়ে নিউজ ছাপা হয়েছে। এই গম আমদানি করে খাদ্য অধিদপ্তর। আন্তর্জাতিক টেন্ডারে বলা থাকে একমাত্র ইসরায়েল ছাড়া যে কোনো দেশ থেকে মাল আমদানি করতে পারে খাদ্য অধিদপ্তর।

সেভাবে টেন্ডার দেয় তারা। টেন্ডারের ভিত্তিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে পার্সেস কমিটি অনুমোদন দেয়। পার্সেস কমিটির অনুমতি নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে অধিদপ্তর। খাদ্যমন্ত্রণালয় মূল্য পর্যন্ত পরিশোধ করে না। এরপর কীসের ভিত্তিতে এসব নিউজ আসছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী বললেন, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। ৮ জুলাই তারিখ দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, যদি কেউ ব্যক্তি উদ্যোগে পরীক্ষা করতে চায় তাহলে মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, তারপরেও মনের মাধুরি মিশিয়ে একশ্রেণীর পত্রিকা ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করছে। খালেদা জিয়া এ নিয়ে একটি রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চান। যে খালেদার জিয়ার শরীরে মানুষ পোড়ার দুর্গন্ধ, তিনি এখন গমের দুর্গন্ধ খোঁজার চেষ্টা করছেন।