নাছির ও নিজাম এমপিসহ ১৮ আসামি খালাস

190

২২ বছর আগে দায়ের হওয়া ছাত্রলীগ নেতা সুফিয়ান হত্যা চেষ্টা মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ফেনীর সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ১৮ আসামি।

বুধবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হুদার আদালত এ রায় দেন।

চট্টগ্রামের জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম বলেন, ‘দীর্ঘদিন উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার বিচার কাজ বন্ধ থাকার পর গত কয়েক মাস আগে ফের মামলাটি সচল হয়ে নিম্ন আদালতে আসে। এরপর আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনা অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।’

মামলার আসামি ছিলেন- নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ফেনীর আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, চসিকের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের একান্ত সহকারী রায়হান ইউসুফ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম, তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা শফি দোভাষ, শহীদুল ইসলাম, শামসুল হুদা, সীমান্ত তালুকদার, ফারুক আহমেদ, বকুল চন্দ্র দাশ, আব্দুল মোনায়েম, সোহরাব হোসাইন, শাকিল আহমেদ, ইমরান ইউসুফ, ওয়াহিদুল আলম মিলন, শাহিনুর সাকি ও মিনহাজুর রহমান।

আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘি ময়দানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সুফিয়ান সিদ্দিকীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ফেনীর সরকার দলীয় সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সুফিয়ান। তদন্ত শেষে একই বছরের ৭ মার্চ নাছিরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলার ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।

সাক্ষীদের আরও জেরা করার জন্য আসামিপক্ষ থেকে আদালতে আবেদন জানানো হয়। আদালত তা নাকচ করে দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসামি ফারুক আহমেদ উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা করেন ১৯৯৪ সালে। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ার পর ২০১৪ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও আবু জাফর সিদ্দিকী ওই রিভিশন মামলায় আদেশ দেন। এতে মামলার ১ থেকে ৮ নম্বর সাক্ষীদের ডেকে পুনরায় (রি-কল) জেরা করা এবং ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার কথা বলা হয়। নির্দেশনাটি এক বছর পর গত ৩ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর ফের আটজনের কাছ থেকে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। ১৪ জুলাই রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

এছাড়াও হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা আরও তিনটি মামলা থেকে ২০০০ ও ২০০১ সালে বেকসুর খালাস পান আ জ ম নাছির। খালাস পাওয়া মামলার মধ্যে রয়েছে ১৯৯৩ সালের ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেলে তিন খুন, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন সদরঘাট ইসলামিয়া কলেজে জোড়া খুন ও ১৯৯৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মবিনুল হক চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার মামলা।