আরও বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা

12

নেপালে গত শনিবারের ভূমিকম্প এ অঞ্চলে বড়সড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রজার বিলহাম সতর্ক করে বলেছেন, গতকালের এ ভূমিকম্প আরও বড় কোনো ভূমিকম্পের পূর্বাবস্থাও হতে পারে। এমনকি এ ভূমিকম্পের পরাঘাত আগামী দুই মাস পর্যন্ত যে কোনো সময় আসতে পারে। ভারতের বিশেষজ্ঞদের বরাতে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৮০ বছরের মধ্যে নেপালে গত শনিবারের ভূমিকম্পই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। কিন্তু গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, এ এলাকায় এর চেয়েও শক্তিশালী ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, ১০ কোটি টন টিএনটি বিস্ফোরিত হলে যে শক্তি নির্গত হয়, ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্পে সে মাত্রার কম্পন হয়েছে। হায়দরাবাদভিত্তিক ন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক হার্শ কে গুপ্ত বলেন, এই অঞ্চলে বিশাল চ্যুতির কথা আমরা জানি, যা বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটায়। রিখটার স্কেলে ৮ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার সিরিজ ভূমিকম্পের জন্য এই চ্যুতিগুলো দায়ী। তাই বলা যায়, এই অঞ্চলের সম্ভাব্য শক্তিশালী ভূমিকম্পের মধ্যে এটি পড়ে না। শক্তি নির্গতের কথা বললে বলা যাবে, ওই অঞ্চলে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত আছে, তার ৪ বা ৫ শতাংশের বেশি শক্তি এ ভূমিকম্পে নির্গত হয়নি। হিমালয় অঞ্চলে ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণা করছেন খড়গপুরের আইআইটির অধ্যাপক শঙ্কর কুমার। তিনি বলেন, ছোট আকারের নিউকিয়ার বোমা বিস্ফোরণের সমান শক্তি নির্গত হয়েছে এ ভূমিকম্পে। কিন্তু ভিন্নভাবে বললে, ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে আমরা ভাগ্যবান। কারণ এখানে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারত। মূল বিষয়টি হচ্ছে, কী পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে সেটি। ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে যে পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়, তা ৭ দশমিক ৯ মাত্রার চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ গুণ বেশি। ভারতের গবেষকরা বলছেন, গতকালের ভূমিকম্পে ভারতে তির পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও এখনো ভূকম্পন-পরবর্তী ঝাঁকুনির ঝুঁকি কমেনি। ভূমিকম্পের পর থেকে বিভিন্ন মাত্রার ১৫টি কম্পন অনুভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনো সময় এ ধরনের ভূমিকম্পের পরাঘাত আসতে পারে। ভূমিকম্প ঘটে যাওয়ার দুই মাস পরও এ ধরনের ঝুঁকি থেকে যায়।