আন্দোলনে নামছে সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের শিক্ষকরা

43

নতুন পে স্কেলে গ্রেড আপডেটসহ টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালের দাবিতে এবার আন্দোলনে নামছেন সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ইতিমধ্যেই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। চলতি মাসে মৌন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ঈদের পর থেকে দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। প্রাথমিকের শিক্ষকরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবি আদায়ে শিগগিরই কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের প্রতিবাদে আজ শনিবার দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। আগামীকাল প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দাবিসংবলিত ব্যানার টানানো হবে। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার প্রতি জেলায় মানববন্ধন করবেন তাঁরা। আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন সমিতির নেতারা।
সমিতির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোয় নবম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের প্রতিবাদে আজ শনিবার দেশের সব সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। আগামীকাল প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দাবিসংবলিত ব্যানার টানানো হবে। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার প্রতি জেলায় মানববন্ধন করবেন তাঁরা। আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন সমিতির নেতারা।
সমিতির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোয় নবম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখা। শুধু আন্দোলনের প্রাথমিক রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে। এই কর্মসূচি পালনের পর সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলে আগামীতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ কী কর্মসূচি আসতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি ও আমরণ অনশনের মতো কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল, মাধ্যমিকের নিয়োগবিধি তৈরি করে শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও পদোন্নতি, কর্মস্থলে সহকারী শিক্ষকদের স্থায়িত্বকাল আট বছর হলেই সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি, একাধিক পদোন্নতির পদ সৃষ্টি, স্বতন্ত্র শিক্ষা অধিদপ্তর স্থাপন, সিনিয়র শিক্ষকদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদায়ন ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্যসচিব মোখলেছুর রহমান চৌধুরী, শিক্ষক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, আলী বেলাল, দেওয়ান এনামুল হক প্রমুখ।
জাতীয় প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতিও নিজেদের দাবি তুলে ধরে। সমিতির সভাপতি নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে পুনর্নির্ধারণসহ ১১ দফা দাবি আদায় না হলে আমরা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সব দায়িত্ব বর্জন ও কর্মবিরতি পালনের মতো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।’
সহকারী শিক্ষকরা ক্রমাগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দাবি করে তিনি বলেন, বৈষম্য না কমিয়ে বরং আরো বাড়ানো হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের মধ্যে বেতনের পার্থক্য ছিল এক ধাপ। ২০০৬ সালে বেতন স্কেলের পার্থক্য বাড়িয়ে করা হয় দুই ধাপ। ১৯৭৩ সালে একজন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের মধ্যে বেতনের ব্যবধান ছিল মাত্র ১০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে মূল বেতনের ব্যবধান দুই হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, সহসভাপতি মনির হোসেন প্রমুখ।