৭৭ মাদ্রাসা ছাত্রের জীবনের চেয়ে সাকির মার খাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ!

6
৭৭ মাদ্রাসা ছাত্রের জীবনের চেয়ে সাকির মার খাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ!

বাংলাদেশের বামপন্থীদের প্রধান বয়ান হলো যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে অন্যদল বিশেষ করে ইসলামপন্থীদের ভুমিকা কোনোভাবেই তারা প্রকাশ্যে মেনে নেবেন না। তাদের চোখে এবারের আন্দোলনে জোনায়েদ সাকি ও সাইফুল হক হলো স্টার নেতা। কারণ তারা পুলিশের হাতে মার খেয়েছেন। পত্রিকায় তাদের ছবি ছাপা হয়েছে। কিন্তু বহু মাদ্রাসার ছাত্র কিংবা জামাত- শিবিরের নেতা কর্মীরা গুম হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে এগুলো তাদের চোখে পড়বে না। প্রথম আলোতে মার খাওয়া একখান ছবি ছাপা হয়েছে এটা হলো তাদের প্রধান স্যাক্রিফাইস।

বিএনপিকে যেহেতু অস্বীকার করা যাবে না। সামনে বিএনপির কাঁধে ভর করে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার চিন্তা আছে এ কারণে তারা অবশ্য বিএনপির নাম উচ্চারণ করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু তারা জানে এই আন্দোলনে খুচরো বাম দলের চেয়ে ইসলামপন্থীদের ভুমিকা বহুগুন বেশি। তা তারা কোনোভাবেই স্বীকার করবে না। এখন যদি তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়, আচ্ছা এতো বড় বিরাট আন্দোলনে বিশাল ভুমিকা রাখলেন- আপনাদের কতজন নেতা কর্মী নিহত ও আহত হয়েছে তার একটি তালিকা দেন- তখন তারা বলবে না, সব দলের লোক মারা গেছে শ্রমজীবী মারা গেছে, কৃষক মারা গেছে। ভাবখানা এরকম শ্রমজীবী আর কৃষকার টিএসসিতে গিয়ে ওনাদের আন্দোলনে হারমোনিয়াম বাজিয়েছে।

এই আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের কথা বাদ দিলাম, শুধু মাত্র ৭৭ জন মাদ্রাসার ছাত্র ও হাফেজ নিহত হওয়ার তালিকা পাওয়া গেছে। সাকি কোনদিন মার খেছে তা নিয়ে কান্নাকাটির শেষ নাই। এই ৭৭ জনের আত্মত্যাগ তাদের কাছে কিছু নয়। এই বামপন্থীরা এদের মানুষ হিসাবে গণ্য করে না। এভাবে সমাজে ফ্যাসিবাদ কায়েমের বয়ান তৈরি করে বামপন্থীরা। যখন ফ্যাসিবাদ তাদেরকে আঘাত করা শুরু করে তখন তাদের মুখ ফুটতে শুরু করে। কিন্তু আসল কাজটা তারা করে না করে অন্য দলগুলো। আবার পরবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা হয়ে উঠে সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগকারী।

শিবিরের কোনো ছেলে আত্মরক্ষার জন্য ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে হলে ছিল- এজন্য ছাত্রলীগের দায় শিবিরকে নিতে হবে। আন্দোলনে শিবিরের শতাধিক ছাত্র মারা গেলো তারা কোনো মুল্য নাই। বামপন্থীদের এসব ইতর সুলভ চিন্তার কারণে ভোটে দাড়ালে ১শ জনের সমর্থন পাবে না – এই হুশ তাদের হলো না।

স্বার্থের জন্য আওয়ামীলীগ ও বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে বড় বড় পদ বাগিয়ে নেয়া সুবিধাবাদ কি-না এ প্রশ্ন করলে তারা বলবে এটা তো রাজনৈতিক কৌশল । শিবির যদি হলে থাকার জন্য করে তা হলে মুনাফেকি। আপনাদের পূর্বসুরী প্রায় সবাই যে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতা হয়েছে এটা কোন আর্দশবাদী রাজনীতি? মন্ত্রী এমপি হওয়ার লোভে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার জন্য ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা দলে যোগ দেয়া কী কোনো নৈতিকতার শিক্ষা?

এখন যদি তাদের জিজ্ঞােস করেন, শাহবাগ করে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন তার দায় নেবেন না? তখন সিদ্দিক চোরের মতো বলবে আমরা তো বুঝতে পারি নাই আওয়ামীলীগ ওটা হাইজ্যাক করবে। ওনাদের গুরু এম এম আকাশ পত্রিকায় কলাম লিখে হাসিনার বিচারবর্হিভুত হত্যার পক্ষে লিখেছিলেন সে জন্য তো তার আজ বিচার চাওয়া উচিত- কিন্তু এ কথা বললে বলবেন মুক্তচিন্তার ওপর আঘাত হানা হচ্ছে।

শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, ফ্যাসিস্ট শাসনকে প্ররোচনা দেয়ার জন্য নুহ উল আলম লেনিন কিংবা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুদের বিচার দাবি করেন না কেন এই বামপন্থীরা?

লেখক : সাংবাদিক