ইফা’র ফতোয়ায় ‘বিস্মিত’ প্রধানমন্ত্রী

25

‘মসজিদে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় জায়েজ নেই’ বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) দেয়া ফতোয়ার খবরে ‘বিস্মিত’ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে কয়েকজন মন্ত্রী এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী ‘অবাক’ হন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

গতকাল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নতুন (চেয়ারে বসে নামাজ আদায় নিয়ে) ফাতোয়ার বিষয়টি মন্ত্রিসভার আলোচনায় উঠে আসে।

বৈঠক সূত্র জানায়, ইফা’র নতুন ফাতোয়ার প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। আর তখন এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চেয়ারে বসে নামাজ পড়া যদি বৈধ না হয় তাহলে অসুস্থদের কি অবস্থা হবে?’ এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে প্রকৃত ব্যাখ্যা জানার আবশ্যকতা নিয়েও কথা বলেন কয়েকজন মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, মসজিদে চেয়ারে বসে ফরজ, ওয়াজিব ও মুয়াক্কাদা নামাজ আদায়ের বৈধতা দেয়া যায়না বলে ফতোয়া দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে চলতি বছরের ১৯ মার্চের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিল।

ফাউন্ডেশনের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, যেখানে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য খোদ শরীয়া আইনে অনেকগুলো বিকল্প বলে দেয়া হয়েছে, সেখানে সেসব বাদ দিয়ে অন্য বিকল্প অর্থাৎ চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের বৈধতা দেয়ার অবকাশ থাকে না।

চেয়ারে বসে নামাজ আদায় কেনো জায়েজ নয় তা বিস্তারিতভাবে ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।

যেমন- চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ে এবাদতের সর্বোচ্চ কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয় না। তাই চেয়ারে বসে নামাজ আদায় সঠিক নয়।

মসজিদে চেয়ার ঢুকিয়ে তাতে আসনগ্রহণ করা রাজাধিরাজ, শাহানশাহ, আহকামুল হাকেমিনের শাহী দরবারের আদব পরিপন্থি বিধায় তা বৈধ নয় এবং তাতে বসে নামাজ আদায়ও বৈধ নয়।

চেয়ার দ্বারা মসজিদে জামায়াতের কাতারে বিঘ্ন ঘটে। তাই মসজিদে চেয়ার ঢুকানো ঠিক নয়।

চেয়ার প্রবেশ করালে মসজিদের স্বাভাবিক ও মৌলিক সৌন্দর্য, সকলের সমান বিনয়ী অবস্থানের বিঘ্নিত ঘটে। তাই মসজিদে চেয়ার ঢুকানো সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দুই পৃষ্ঠার ফতোয়ার কোথায়ও পবিত্র কোরআন শরীফের রেফারেন্স দেয়া হয়নি। বিশুদ্ধ কয়েকটি হাদীস গ্রন্থের নাম তথ্যসূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এমন কোনো হাদীস উল্লেখ করা হয়নি যাতে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করা যাবে কি যাবে না তা প্রমাণিত হয়।