বোর্ডে স্থান নিতে টাকার লেনদেন, পছন্দমতো কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়

16

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ তাদের ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখেছে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে ঢাকা বোর্ডে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। যদিও অবস্থানের দিক থেকে এক ধাপ পিছিয়েছে। গত বছর দ্বিতীয় অবস্থানে ও ২০১৩ সালে দেশ সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল মতিঝিল আইডিয়াল।

তবে এবার এ প্রতিষ্ঠান থেকে তিনজন ফেল করার কারণেই অবস্থান নিচে নেমে এসেছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। যদিও স্থান দখলকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম।

শনিবার দুপুরে সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তার সঙ্গে কথা হয়। অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, ‘গত বছর ফলাফলের দিক থেকে আমরা ছিলাম দ্বিতীয় স্থানে। আর ২০১৩ সালে ছিলাম প্রথম অবস্থানে। অবিভাবক, ছাত্র/ছাত্রী ও শিক্ষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এতো ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্যরা বিদ্যালয়টিকে খুবই টেককেয়ার করেন। ভালো রেজাল্ট করার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তবে আরো ভালো রেজাল্ট হতে পারতো।’

আগের চাইতে অবস্থানের দিকটা নেমে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হরতাল-অবরোধে পরীক্ষা একের পর এক পেছানোর জন্য রেজাল্ট একটু খারাপ হয়েছে। তবে ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার প্রস্তুতি খুবই ভালো ছিল। সঠিক সময়ে পরীক্ষাগুলো হতে পারলে রেজাল্ট আরো ভালো করার সম্ভবনা ছিল।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বোর্ডে স্থান পাওয়া নিয়ে এক ধরনের দুর্নীতি চলছে। টাকা দিয়ে স্থান করে নেয়া হচ্ছে। পছন্দমতো কেন্দ্র পরিবর্তন করে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তবে যারা এটা করছেন তারা নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে করছেন। আমরা কোনোভাবেই নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এরকম কাজ করবো না।’

তিনি বলেন, ‘মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল ১ হাজার ৫৮১ ছাত্রছাত্রী। যার মধ্যে ছেলের হার ৭৫ শতাংশ অর্থাৎ ৯৯৭ জন এবং মেয়ে ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫৮৪ জন। আর ২০১৪ সালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ হাজার ৪০৫ জন ছাত্রছাত্রী। যার মধ্যে পাস করেছিল সবাই। এছাড়া ২০১৩ সালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ হাজার পরীক্ষার্থী।’

প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ থেকে যাত্রা করার পর থেকেই ভালো ফলাফল অর্জন করছে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীরা। ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাঁচ জন জিপিএ-৫ পায়। ২০০২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ২৩ জন ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকা বোর্ডে সর্বোচ্চ এবং ২০০৩ সালের এসএসসিতে ৯৯ জন ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়ে সারা দেশে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পাবার গৌরব অর্জন করে।

২০০৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৩০২ জন জিপিএ-৫ পায়। ২০০৫ সালে জিপিএ-৫ পায় ৪৫২ জন ছাত্রছাত্রী। ২০০৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৫২৫ জন ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ লাভ করে। ২০০৭ সালে ২৭৬ জন জিপিএ-৫ পেয়ে অতীত গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখে। এরপর ২০১০ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত ঢাকা বোর্ডে পরপর তিনবার তৃতীয় স্থান করে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে ভালো ফলাফলে খুশি ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সবাই। দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পরই শুরু হয় উৎসব।