২৬ মার্চ থেকে অবরোধ-হরতাল থাকছে না

44

5_72635আগামী ২৬ মার্চের পর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে হরতাল-অবরোধ থাকছে না বলে আলোচনা চলছে বিএনপির দলীয় পরিমণ্ডলে। ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই হরতাল-অবরোধের পথ থেকে বিএনপির এমন সরে আসার চিন্তা বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

১৮ মার্চ তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই জোর আলোচনা চলছে বিএনপি কোনো প্রার্থীকে এই নির্বাচনে সমর্থন দেবে কিনা- তা নিয়ে।

তবে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও বিএনপির দলীয় সূত্রের খবর, বিএনপি নির্বাচনে তাদের জোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে। শিগগিরই তাদের সমর্থিত প্রার্থী ঘোষণার পর প্রচার-প্রচারণায় নামবে।

আর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে তারা কিছুটা বদলাচ্ছে আন্দোলনের কৌশল। নতুন কৌশল অনুযায়ী, ২৬ মার্চ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটিতে কোনো অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি থাকবে না। তবে দেশের আর সব স্থানে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘পজিটিভ’।

সবশেষ শুক্রবার (২০ মার্চ) রাতে খালেদার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদও একই কথা জানান সংবাদমাধ্যমকে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে কাকে সমর্থন দেবে সেটা মোটামুটি নিশ্চিত করেছে। প্রচার-প্রচারণাও নেমে পড়েছেন তারা।

এ অবস্থায় বেশি সময়ক্ষেপণ করতে রাজি নন বিএনপি নেতারা। এর আগে চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই জয়ী হয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। তাই বড় দুই সিটির দখল নিতেও লড়তে চান তারা। দলের অধিকাংশ নেতা এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মত দিয়েছেন বলে জানায় সূত্র।

বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, তিন সিটিতেই শক্তিশালী প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আউয়াল মিন্টু এগিয়ে রয়েছেন অন্য সবার থেকে। ঢাকা দক্ষিণে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের নাম শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া ডেমরা থেকে নির্বাচিত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনের মনোনয়ন দাখিল করার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে চট্টগ্রাম সিটি বর্তমানে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর দখলে। তবে বর্তমান মেয়র এম মনজুর আলমকে এবার বিএনপি সমর্থন নাও দিতে পারে। নতুন মেয়র প্রার্থী কে হতে পারে সেটি জানা যায়নি এখনো। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের নামও শোনা যাচ্ছে।

এর আগে গত ১৩ মার্চ দুই মাসের বেশি সময় পর জনসম্মুখে আসেন সংবাদ সম্মেলনে। চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোনো দিক নির্দেশনা না থাকলেও সরকার পতন ও নতুন করে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

তবে দলীয় সূত্র জানায়, দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের অনেকেই আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তনের পক্ষে। সে অনুযায়ী দুই সিটিতে হরতাল-অবরোধ বন্ধ রেখে বাকি সব জায়গায় অন্দোলন চলবে- এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে দলটি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা চাঙা হয়ে উঠতে পারেন বলেই মত তাদের।