রায়ের কপি কারাগারে

23

kamruzzamanমানবতিাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ পিটিশনের রায়ের কপি এখন কারাগারে।

বুধবার বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্বাক্ষর শেষে রায়ের কপিটি কারাকর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে রায়ের অনুকপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে কপিটি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছেছে।

এর আগে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচাপতি ওবায়দুল হাসান রায়ের কপিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঢাকা মেট্রো-চ ৫৩-৮১২১ নম্বরের একটি মাইক্রোবাসে করে বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে রায়ের কপিটি পাঠানো হয়।

এর আগে বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রায়ের কপি নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের মাইক্রোবাসে (ঢাকা মেট্রো-চ ৫৩৮৬৮৩) করে ট্রাইব্যুনাল রেজিস্ট্রার রুমে যায়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান, কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।

তারা ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আফতাব উজ্জামানের কাছে রায়ের কপি স্বাক্ষরের জন্য জমা দেন। সেখানে রায়ের কপিতে স্বাক্ষর করেন রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি-রেজিস্ট্রার আফতাব উজ্জামান।

দুপুরে রায়ের কপি তৈরির পর সেটি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফিরোজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরীর কাছে পাঠানো হয়। পরে তারা সেই কপিতে সই করেন। স্বাক্ষর শেষে ৩৬ পৃষ্ঠার রায়টি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

এদিকে ট্রাইব্যুনাল থেকে পাঠানো রায়ের কপিটি কারাগারে পৌঁছামাত্রই শুরু হবে কামারুজ্জামনের ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন করেন কামারুজ্জামান। এক মাস পর গত রোববার কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার তা খারিজ করে দেন।

২০১০ সালের ১৩ জুলাই কামারুজ্জামানকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে আটক করে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। একই বছর ২ আগস্ট তাকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। পরে ওই বছরের ৬ জুন কামারুজ্জামান ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। ওই আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩ নভেম্বর তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।

এরপর চলতি বছর আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন। তবে কামারুজ্জামান আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে স্থগিত হয়ে যায় মৃত্যু পরোয়ানার কার্যকারিতা।