‘মানবাধিকার’ পাবে শিম্পাঞ্জিও

28

শিম্পাঞ্জি বলে কী মানুষ নয়! নিউ ইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টের বিচারক বারবারা জ্যাফ সম্প্রতি এক রায়ে বলেছেন কারাবন্দি মানুষ এবং গবেষণাগারে আটক শিম্পাঞ্জি, দু’জনেরই সমান অধিকার৷ জ্যাফ বলেছেন, মানুষের মতো শিম্পাঞ্জিদেরও, বেআইনিভাবে আটক করার বিরুদ্ধে হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করার অধিকার আছে৷ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নন -হিউম্যান রাইট্স গ্রুপ (এনএইচআরপি) নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷

এই সংস্থাটিই দু’বছর ধরে লং আইল্যান্ডের স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক দুটি শিম্পাঞ্জি, হারকিউলিস ও লিও-র মুক্তির জন্য আইনি লড়াই চালাচ্ছিল৷ তাদের দাবি ছিল ওই দুই শিম্পাঞ্জিকে ফ্লোরিডার ফোর্ট পিয়ার্স অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেওয়া হোক৷ এই মামলাটি কাউন্টি আদালত খারিজ করে দিলে, সংস্থাটি উচ্চ আদালতে আপিল করে৷ পরবর্তী শুনানির দিন, ৬ মে, স্টোনি ব্রুকের এক প্রতিনিধিকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে৷ তাকে প্রমাণ করতে হবে যে শিম্পাঞ্জিদের আটক রেখে আইন লঙ্ঘন করা হয়নি৷ যদি সেদিন বিচারক শিম্পাঞ্জিদের মুক্তির পক্ষে রায় দেন, তা হলে সেটি ঐতিহাসিক বলে বিবেচিত তো হবেই, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য আরও যে সব জীবজন্তুকে গবেষণাগারে আটকে রাখা হয়, পশুপ্রেমীরা তাদের মুক্তির দাবিতেও সোচ্চার হবেন৷

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কার্যনির্বাহী অধিকর্তা নাতালি প্রোসিন বলেছেন, ‘আমাদের পরিশ্রম সার্থক৷ আমরা চাই শিম্পাঞ্জির মতো সংবদনশীল প্রাণীরা স্বাধীনভাবে থাকার অধিকার পাক৷ যে দরজা আমরা খুললাম, তা আর কখনও পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না৷ ‘এনএইচআরপি বলেছে, তাদের আনা মামলাটি পশুকল্যাণ নয়, পশু অধিকার সম্পর্কিত৷ শিম্পাঞ্জিরা এতটাই বুদ্ধিমান ও সংবেদনশীল, যে তাদের কখনই খাঁচায় বন্দি করে রাখা উচিত নয়৷ তারা তাদের অতীত সম্পর্কে যেমন ওয়াকিবহাল, তেমনই তারা ঝাড়াই বাছাই করার ক্ষমতাও ধরে৷ সংস্থাটি মনে করে ওই শিম্পাঞ্জি দুটিকে ফ্লোরিডার অভয়ারণ্যে ছেড়ে দিলে তারা প্রাণে বাঁচবে৷ কারণ, একটি হ্রদের ওপর ১৩টি কৃত্রিম দ্বীপে প্রায় ২৫০টি শিম্পাঞ্জি বাস করে৷ এর ফলে সেখানে তারা আফ্রিকায় তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানের মতোই পরিবেশ পাবে৷ ওই সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, হাতি, শুশুক, বনমানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীদের জন্য তারা আইনি লড়াই চালাবে৷

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বিচারক জ্যাফের রায় নিয়ে এতটা আশাবাদী নন৷ ক্যালিফোর্নিয়ার পেপারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপক রিচার্ড কাপ বলেছেন, ‘এমনও হতে পারে যে বিচারক দু’পক্ষের বিশদ বিবরণ শোনার পরেই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেবেন৷’- সংবাদসংস্থা