বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানি খাতুন হত্যা মামলার রায় পুনর্বিবেচনার কাজ আবারও পিছিয়ে গেছে।
প্রায় চার মাস পরে বুধবার ওই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আদালতের কাজ শুরু করা যায়নি। এর আগে রায় পুনর্বিবেচনার কাজ দুবার স্থগিত করে দিয়েছিল বিএসএফ আদালত।
বিএসএফ আধিকারিক সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে মোট ৫ বিচারকের গোটা প্রক্রিয়াটি চালানোর কথা ছিল কোচবিহারের সোনারি বিএসএফ ছাউনিতে।
বিএসএফ সূত্রগুলি বলছে বিচারকেরা সকলেই আজ হাজির হলেও বিএসএফের সরকারি আইনজীবী বা প্রসিকিউটর কোচবিহারে পৌঁছতে পারেননি অসুস্থতার কারণে। তাই আদালত বসলেও কাজ শুরু করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার আদালত বসবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বাহিনীর তরফ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
বিএসএফ আইন অনুযায়ী যে বিচারকেরা মূল মামলার বিচার করেছিলেন, তারাই পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়াও চালাবেন। কিন্তু তার এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বদলি হয়ে গেছেন।
সেনাবাহিনীর সমতুল্য বিএসএফের নিজস্ব আদালত জেনারের সিকিউরিটি ফোর্সের কোর্ট বা জিএসএফসি ২০১৩-র সেপ্টেম্বরে তাদের প্রথম রায়ে ফেলানি হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেছিল। পরে বাহিনীর মহা নির্দেশক সেই রায় পুনর্বিবেচনার আদেশ দেন।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে বাবার সঙ্গে সীমান্ত পেরোনোর সময়ে গুলিবিদ্ধ হন ফেলানি। দীর্ঘক্ষণ তাঁর মৃতদেহ কাঁটাতারেই ঝুলে ছিল পুনর্বিবেচনার কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু পাঁচ দিন পরে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
নভেম্বরে আবারও পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। কিন্তু ২১ নভেম্বর আদালতেই অভিযুক্ত অমিয় ঘোষ জ্ঞান হারানোর কারণে চার মাস পিছিয়ে গিয়েছিল প্রক্রিয়া।
তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল আর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। তার আগে মি. ঘোষের কিডনির সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে নিয়মিত ডায়ালিসিস করতে হয়েছিল।
যদিও পুনর্বিবেচনার সময়ে নতুন করে কারো সাক্ষ্য নেয়ার নিয়ম নেই, তবুও ফেলানির বাবার সাক্ষ্য নতুন করে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
সর্বশেষ পুনর্বিবেচনার সময়ে অবশ্য ফেলানির পরিবারের কেউ ভারতে আসেননি বলেই জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী আব্রাহাম লিঙ্কন।
বি এস এফ কর্মকর্তারা বলছেন, ফেলানির পরিবার বা তাদের আইনজীবীর এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার আর কোনও প্রয়োজন নেই, কারণ তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়ে গেছে। এবারে নতুন সাক্ষ্য আর মূল মামলার নথিপত্র দেখে বিচারকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে বাবার সঙ্গে সীমান্ত পেরোনোর সময়ে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চৌধুরী হাটে গুলিবিদ্ধ হন ফেলানি। তার বিয়ের জন্যই দেশে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ভোরের কুয়াশায় কোনও একজনকে সীমান্ত পেরতে দেখে গুলি চালান বিএসএফ প্রহরী অমিয় ঘোষ। মৃত্যুর পরে দীর্ঘক্ষণ ফেলানির মৃতদেহ কাঁটাতারেই ঝুলে ছিল।
বিএসএফ নিজের প্রহরীর বিরুদ্ধেই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে কিন্তু মামলা শুরু হতেই লেগে যায় প্রায় আড়াই বছর।
সূত্র : বিবিসি।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.