সীমান্ত ও সমুদ্রবন্দর খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বান কি মুন

13

দালালদের খপ্পরে পড়ে অথৈ সমুদ্রে নৌকায় আটকে পড়া হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। আন্দামান সাগর, মালাক্কা প্রণালী এবং মাল্লাকায় আটকে পড়া এই মানুষদের আশ্রয় দিতে এ অঞ্চলের সরকারগুলো অস্বীকার করার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। বিপদগ্রস্ত মানুষগুলোর জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর সীমান্ত ও সমুদ্রবন্দর খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার মুখপাত্রের মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান বান কি মুন।

একই সঙ্গে সমুদ্রে আটকে পড়াদের উদ্ধার এবং তাদের দেশে জোরপূর্বক ফিরিয়ে না দেয়ার ব্যাপারে দেশগুলোর প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার থেকে নৌকা যোগে সাগর পাড়ি দেয়া মানুষদের ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া কোনো মানবিক সহায়তা ছাড়াই ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার।

ইউএনএইচসিআর বলেছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সরকারগুলোকে মানবিক দৃষ্টিতে এ বিষয়টিকে আঞ্চলিক সমস্যা হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। শরণার্থী, অর্থনৈতিক অভিবাসী, পাচারের শিকার, বিচ্ছিন্ন ও পাচার হওয়া শিশু এসব বিষয়ের গোড়ার সমস্যা নিয়ে ভাববার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব তার বিবৃতিতে বলেছেন, এ সমস্যার সমাধানকল্পে একটি আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগের কথা তিনি শুনেছেন। তিনি একে স্বাগত জানান। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের একক ও যৌথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর জানা যাচ্ছে, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে এই অবৈধ অভিবাসীদের নৌকায় তুলে পাচারকারীরা প্রথমে নিয়ে যাচ্ছে থাইল্যান্ডে। সেখানে জঙ্গলের মধ্যে তাদের কিছুদিন রেখে সুযোগ বুঝে আবারও নৌকায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া উপকূলে।

থাই সরকার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করায় এবং মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সরকার তাদের সমুদ্র সীমায় নজরদারি বাড়ানোয় অন্তত আট হাজার মানুষ মাঝ সমুদ্রে পাচারকারীদের নৌকায় আটকা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

মালয়েশিয়ার নৌবাহিনী বৃহস্পতিবারও এরকম দুটি এবং থাই নৌবাহিনী একটি নৌযান তাদের জলসীমা থেকে গভীর সাগরের দিকে ঠেলে দেয়। এর মধ্যে একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে গিয়ে ডুবতে শুরু করলে স্থানীয় জেলেরা প্রায় আটশ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে তীরে পৌঁছে দেন।