বেতন কাঠামো চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য যাচ্ছে মন্ত্রিসভায়

32

সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই কাঠামোতে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের শীর্ষ পদে থাকা প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সচিব পদমর্যাদার গ্রেড-১ দেওয়া হলেও তাঁদের সঙ্গে সচিবদের বেতন-ভাতায় ব্যবধান রাখা হয়েছে। সচিব ও সচিব মর্যাদার এসব কর্মকর্তা এত দিন গ্রেড-১ হিসেবে বিবেচিত হলেও মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা চূড়ান্ত কাঠামোতে সচিবদের মূল বেতন পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে আলাদা গ্রেড সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে প্রশাসনের বাইরে অন্য ক্যাডারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল রাখা না-রাখার বিষয়টি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরই বেতন কাঠামোটি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গেজেট আকারে জারি করা হবে। ১ জুলাই থেকে নতুন কাঠামোতে বেতনের টাকা গুনবেন সরকারি চাকুরেরা।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান বেতন কাঠামোতে ১ নম্বর গ্রেডটি সচিবদের, নির্ধারিত ৪০ হাজার টাকা। ড. ফরাসউদ্দিনের বেতন ও চাকরি কমিটিও সচিবদের এক নম্বর গ্রেডেই অন্তর্ভুক্ত রেখে বেতন অতিরিক্ত চার হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করেছিল। বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে। আর সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেওয়ার সুপারিশ ছিল ড. ফরাসউদ্দিন কমিশনের। সচিব কমিটিও একই পথ অনুসরণ করে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদনে জমা দিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেওয়ার খবরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। এগুলো বহাল রাখার দাবি জানিয়ে সচিবালয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছে। তাই স্পর্শকাতর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না করে মন্ত্রিসভার নির্দেশনা চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।


অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার দেওয়া বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাতে ১৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রেখেছেন। ফলে এখন চাকরিজীবীরা যে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন, এর সঙ্গে নতুন কাঠামোর বর্ধিত মূল বেতন আগামী ১ জুলাই থেকে পাওয়া যাবে। তবে বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা ২০১৬ সালের জুলাই থেকে দেওয়া হবে। মূল বেতনের পাশাপাশি সব ধরনের ভাতাও আয়করের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। ভাতার ওপর কর বসানোয় নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস ছিল, তাতে ভাটা পড়েছে।

অর্থ বভাগের কর্মকর্তারা জানান, ২০০৯ সালের বেতন কাঠামোর তুলনায় নতুন কাঠামোতে বেতনের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও চূড়ান্ত বিচারে এখন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যা পাচ্ছেন, এর চেয়ে ৬০ শতাংশ বাড়বে। কারণ, ২০১৩ সাল থেকে দেওয়া ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা সমন্বয় করা হবে। সঙ্গে কমে যাবে ইনক্রিমেন্টও। এ ছাড়া ড. ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশ থেকে বেশ কিছু ভাতা বাদ দেওয়া হয়ছে।