এবার মালয়েশিয়ায় গণকবর, রয়েছে শতাধিক লাশ

20

এবার মালয়েশিয়ায় পাওয়া গেল মানবপাচারের শিকার হতভাগ্য অভিবাসীদের গণকবর। মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী থাই সীমান্তবর্তী মালয়েশিয়ার সীমান্ত শহর পাডাং বেসারের কাছাকাছি অবস্থিত ওই গণকবরে শতাধিক রোহিঙ্গা অভিবাসীর মৃতদেহ রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার দি স্টার অনলাইন জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে গণকবরের স্থানে পুলিশ ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল অবস্থান করছেন। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে এখনও গণকবরটির অবস্থান সম্পর্কে তথ্য গোপন রেখেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় পুলিশের প্রধান তান শ্রী খালিদ আবু বাকার সোমবার সংবাদ সম্মেলনে গণকবরের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি।

মালয়েশিয়ার পাডাং বেসার জেলা পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা দি স্টারকে জানান, গণকবরটি সংরক্ষিত এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে বেসামরিক লোকের প্রবেশাধিকার নেই। বর্তমানে পুলিশ ওই স্থান ঘিরে রেখেছে। স্থানটি পাহাড়ি এলাকা বলেও জানান তিনি। মালয়েশিয়া সীমান্তের ওই অংশের উল্টো দিকে থাইল্যান্ডের পাহাড়ি এলাকাও পেদাং বেসার নামে পরিচিত। জেলাটি যে প্রদেশে, সেই শংখলাতেই গত মাসে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে জেলার মেয়রকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মিয়ানমারে সরকারের নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছর ধরেই সমুদ্রপথে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবেশী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ থেকেও কাঠের নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। গত মাসের শেষে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর পাওয়ার পর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের মুখে বিপদগ্রস্ত মানুষদের সাগর থেকে উদ্ধার করে সাময়িক আশ্রয় দিতে ও নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে সম্মত হয়েছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।

বিভিন্ন স্থান থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকায় করে প্রথমে আনা হয় থাইল্যান্ডে। সেখানে জঙ্গলের মধ্যে পাচারকারীদের বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের রাখা হয়। পরে সময় সুযোগ মতো তাদের আবার নৌকায় করে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানো হয়। অনেক সময় পাচারকারীরা তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় এবং আটকে রেখে মুক্তিপণও আদায় করে। সম্প্রতি বিবিসির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, থাই সমাজের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে মানবপাচারে যুক্ত। মালয়েশিয়া সরকার সম্প্রতি সেখানে পাচারকারীদের কোনো ক্যাম্প না থাকার কথা দাবি করলেও সেখানেও গণকবরের খবর এলো।