সাক্ষীকে আসামি করতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

13

এক মামলার সাক্ষীকে সেই মামলার আসামি করতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ওই মামলাসংক্রান্ত একটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিষ্পত্তি করে গত ১২ এপ্রিল এই রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ। সম্প্রতি এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হয়েছে।

অর্থ পাচারের অভিযোগে বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদক ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট একটি মামলা করে। এ মামলার সাক্ষী ছিলেন জুলফিকার আলী ও তার স্ত্রী রহিমা আলী।
সিঙ্গাপুরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে জুলফিকার আলী ও তার স্ত্রী রহিমা আলীর একটি হিসাব থেকে হাফিজ ইব্রাহিম দম্পতির একটি হিসাব নম্বরে এক লাখ ৭৫ হাজার ডলার জমা করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে এ অর্থ জমা হয়। এই অভিযোগে ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি করেন। ২০১২ সালের ১২ জুন এ মামলায় হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে আদালত তা আমলে নেন।

নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন হাফিজ ইব্রাহিমের স্ত্রী মাফরুজা সুলাতানা। তার আবেদনে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২ জুন হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় দেন। এরপর বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তৃতীয় বেঞ্চে পাঠানো হয়। তৃতীয় বেঞ্চে শুনানির পর আদালত ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রুল খারিজ করে রায় দেন। তবে রায়ে জুলফিকার আলী দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

আদালতের নির্দেশের পর দুদক বিশেষ জজ আদালতে গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করে। নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলফিকার আলীর মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তবে মামলা প্রমাণের জন্য জুলফিকার আলীকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাকে আসামি করা হলে এ মামলা প্রমাণের জন্য আর কোনো সাক্ষী থাকবে না।

এ দিকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন মাফরুজা সুলতানা। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে জুলফিকার আলী দম্পতিকে আসামি হিসেবে গণ্য করে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করতে নির্দেশ দেন।