ফোনের রেডিয়েশনে ক্ষতি শরীরের, মেনে নিলেন বিজ্ঞানীরা

92

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন মানবদেহের ক্ষতি করতে পারে। এতদিন নানা গবেষণা, সমীক্ষা, জল্পনায় এই ইঙ্গিত ছিল।

কিন্তু এই প্রথম মার্কিন বিজ্ঞানীরা স্বীকার করে নিলেন, সত্যি সত্যি মোবাইল ফোনকে সবসময় শরীরের কাছাকাছি রাখা খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। এই বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক হেলথ সম্প্রতি একটি গাইডলাইন সামনে এনেছে। যেখানে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোন থেকে কখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ও কী করলে সেই ক্ষতির হাত থেকে খানিকটা রেহাই পাওয়া যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার কেরেন স্মিথ বলছেন, ‘অনেকেই এতদিন ধরে জানতে চাইছিলেন যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কি ক্ষতিকারক? সবসময় ফোন পকেটে রাখা সত্যি বিপজ্জনক হতে পারে। ’ কী করলে এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। স্মিথ বলছেন, ‘ঘুমানোর সময় মাথার পাশে ফোন রেখে শোয়া খুবই বিপজ্জনক। অন্তত মাথার কাছ থেকে এক হাত দূরে রাখুন আপনার স্মার্টফোন। চেষ্টা করুন ফোন বুকপকেট বা জিন্সের পকেটে না রাখতে। ’

এখানেই শেষ নয়, ডাক্তাররা মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে একটি প্রামাণ্য গাইডলাইনও ইস্যু করেছেন।

সেখানে বলা হয়েছে:
১. যখন ফোনের সিগন্যাল দুর্বল দেখতে পাচ্ছেন, তখনই ব্যবহার কমান। কারণ, ওই সময়ই মানবদেহের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে মোবাইল ফোন।

২. অডিও বা ভিডিও ডাউনলোড করা কমান। পারলে ফেসবুক লাইভ-এর মতো প্রযুক্তির ব্যবহার কমান। শরীর থেকে ফোন যত দূরে রাখবেন, ততই বেশি সুস্থ থাকবেন।

৩. রাতে ঘুমানোর সময় ফোন একেবারেই ব্যবহার করবেন না। কারণ, শুধু ফোনের রেডিয়েশনই নয়, অন্ধকারে তার আলোও আপনার চোখের ক্ষতি করে।

৪. কথা বলা হয়ে গেলে হেডফোন খুলে রাখতে ভুলবেন না।

ডাক্তাররা বলছেন, গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার করলে ব্রেন টিউমার হতে পারে। পুরুষদের বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাথাব্যথা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কানে কম শোনা ও ঘুম না আসার মতো সমস্যায় পড়তে পারেন স্মার্টফোন-অ্যাডিক্টরা।

এই গবেষণাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১১-তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ ইঙ্গিত দেয়, বেশিক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করলে ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে। ২০১৬-তে ইউএস ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রাম-এ ইঁদুরদের উপর এক গবেষণায় দেখা যায়, ফোনের কাছাকাছি থাকায় তাদের মধ্যে ক্যানসারের প্রবণতা বেড়েছে।

অতএব বিশেষজ্ঞরা বলছেন আপনিও যদি সুস্থ থাকতে চান, ফোনের ব্যবহার কমান।

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন নিয়ে বহু তথ্যই এখনও চাপা রয়েছে। সেগুলি যাতে প্রকাশ্যে না আসে তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী বহুজাতিক সংস্থাগুলির কর্তারা। কিন্তু ছোটখাটো যে কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসে পড়ে, তার ফলাফলই আতঙ্কিত করার জন্য যথেষ্ট।