ফেসবুক আসক্তির কারনে ফল বিপর্যয়

33

তথ্যপ্রযুক্তি যেমন এনেছে গতি, তেমনি এর নেতিবাচক প্রভাবে ডুবছে তরুণ সমাজ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। প্রযুক্তিনির্ভর যুগে ফেসবুক-ইন্টারনেট ছাড়া ছাত্র-ছাত্রী খুঁজে পাওয়াই দায়। শহরের ছেলে-মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। ফেসবুক-ইন্টারনেটেই ডুবছে শিক্ষা ব্যবস্থা।

রোববার (০৯ আগস্ট) দুপুরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) ফল প্রকাশের পর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন।

মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের কলেজে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ থাকার পরও অনেক ছাত্রী লুকিয়ে ফোন নিয়ে আসে। ছাত্রীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাথরুমে গিয়ে মোবাইলে কথা বলে। মোবাইল আটকে রাখলে অভিভাবকরা কলেজে এসে অভিযোগ করেন, কেন মোবাইল ধরেছি। তাহলে আমরা কোথায় যাবো! কিভাবে শিক্ষা দেবো!

তিনি বলেন, অনেক অভিভাবক আবার এসে অভিযোগ করেন, তার মেয়ে রাত জেগে পড়ার নামে মোবাইলে ফেসবুক খুলে বসে থাকেন। এভাবে ফেসবুক ব্যবহার করার ফলে শিক্ষার মান দিন দিন খারাপের দিকেই যাবে। আগামীতে আরও খারাপ ফল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইন্টারনেটের কুফল দিন দিন আরও বাড়বে। পাশাপাশি পাসের হার আরও কমবে। ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে ঠিকমতো পড়ে না বলে জানান তিনি।

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১০৮৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। এরমধ্যে পাস করেছেন ১০৬২ জন, ফেল ২৪ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেন ৬২৫ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৪৬ জন, ফেল করেছেন একজন ও অনুপস্থিত একজন।

মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেন ১৫৮ জন, পাস করেছেন ১৩৮ জন, ফেল ২০ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে সাতজন।

বাণিজ্য বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেন ৩০১ জন, পাস করেছেন ২৯৮ জন ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৩ জন।

২০১৪ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১১৫৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছিলেন ১১৫৪ জন। গতবার ফেল করেছিলেন তিনজন ও এবার করেছেন ২৪ জন।

এ কলেজের শিক্ষার্থী মাশফিয়া আক্তার এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
অনুভুতি প্রকাশ করে বলেন, খুব ভালো লাগছে। কেমন লাগছে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

এরপর কোথায় ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা জানতে চাইলে বলেন, ইচ্ছা আছে মেডিকেল বা বুয়েট। বাবা-মায়ের ইচ্ছা আমি ডাক্তার হই। সেই স্বপ্ন পূরণের কিছুটা পূর্ণ হলো রেজাল্টে। বাকি কাজ এখনও পড়ে রয়েছে।

ফল প্রকাশের পর কলেজ ক্যাম্পাসেসে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি ছিল কান্নার রোল। প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় অনেকেই মাঠের মধ্যে কান্নায় গড়াগড়ি করেন।